কাইমুল ইসলাম ছোটন, কক্সবাজার: দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ কক্সবাজারের মহেশখালী। চারপাশে সমুদ্র, মাঝখানে পাহাড় আর সমতল ভূমি। শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য এখানে নির্মিত হয়েছে একটি শিশুপার্ক। নামকরণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে ‘শেখ রাসেল শিশুপার্ক’।
কক্সবাজার শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ছোট মহেশখালীর লম্বাঘোনা এলাকায় শিশুপার্কটি অবস্থিত। ভূমিদস্যুদের হাত থেকে সরকারি জায়গা উদ্ধার করে শিশুপার্ক নির্মাণ করেন মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান।
পাহাড়ি সড়ক বেয়ে শিশুপার্কে প্রবেশ করলে দেখা মিলবে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দেয়া বাঘের। তাছাড়া রয়েছে, জেব্রা, জিরাফ, হরিণ, হাতি, ঘোড়া, হরিণ ও ঈগলের ম্যুরাল। সাপের মতো লম্বা করে সুচালো বাঁকা ঠোঁট নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ড্রাগন।
শিশুপার্ক ঘুরে দেখা যায়, শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবক থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পুরুষরা শিশুপার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতেছেন। দোলনায় চড়ছেন শিশুরা। অবিভাবকরাও বসতে পারবেন নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশে।
লাল টুকটুকে জামা পড়ে মায়ের হাত ধরে পার্কে এসেছে ইয়াছিন ও সুমাইয়া। হরিণের পিঠে ওঠে হাসি, উল্লাস দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত তারা। ছবি তুলতে চাইলে লজ্জারাঙা খুনসুটিতে একে-অপরের দিকে তাকাচ্ছে তারা। পার্কটি বনাঞ্চল ঘেরা হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠবে পাখিদের নিরাপদ অভয়ারণ্য।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন জায়গাটি ভূমিদস্যুদের দখলে ছিল। উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জায়গাটি উদ্ধার করে। চার একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করে শিশুপার্ক। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় বাস্তবায়ন করেন ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদ।
স্থানীয়রা জানান, কভিড-১৯-এর কারণে দীর্ঘদিন শিশুরা ঘরবন্দি ছিল। তাছাড়া উপজেলায় শিশুদের জন্য কোনো বিনোদন পার্ক না থাকায় কোথায় ঘুরতে যেতে পারত না। শিশুপার্কটির মাধ্যমে দ্বীপবাসীর অনেক দিনের স্বপ্ন পূর্ণ হলো। এটি শিশুদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঘুরতে আসা মেহেদী বলেন, অবসর সময়ে পার্কে গেলে ক্লান্তি দূর হয়ে, মনটা আনন্দময় হয়ে উঠে। বিকালে বাচ্চাদের নিয়ে খেলাধুলা করা যায়। এ রকম একটি নান্দনিক শিশু পার্ক গড়ে তোলার জন্য সৃজনশীল কাজের মানুষ ইউএনওকে ধন্যবাদ জানাই।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়ান সিকদার বলেন, কোমলমতি শিশুরা দেশের পশুপাখির সঙ্গে পরিচিত লাভের পাশাপাশি বিনোদনের সুযোগ পাবে। তবে স্থানীয়দের জন্য প্রবেশ ফি মওকুফ করলে আরও ভালো হবে।
মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, মহেশখালীতে পার্ক না থাকার বিষয়টি আমাকে ভীষণ ভাবিয়েছে। তাই শিশুদের জন্য এই পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে। দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানোর জন্য কাজ চলছে। তাছাড়া সব ইউনিয়নে শিশুপার্ক করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।