বৈজ্ঞানিক নামটির সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত ননÑক্যানাবিস ইন্ডিকা। তবে এর ব্যবহার অনেক। বিশ্বের প্রায় সব দেশে এটি ব্যবহার করে মাদকসেবীরা। সস্তা ও সহজলভ্যতার কারণে এর প্রতি আসক্ত হয় অনেকে। ফলে মারিজুয়ানা বা গাঁজার নেশায় ক্ষয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ জীবন।
গাঁজা গাছের নির্যাসই মূলত নেশার বস্তু হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ক্যানাবিডিয়াল ও ক্যানাবিনলিক অ্যাসিড এর উপাদান।
সাধারণত অশিক্ষিত, সীমিত আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যেই এটি সেবনের প্রচলন বেশি। তবে উচ্চশিক্ষিত ও অভিজাত শ্রেণির মধ্যেও এর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। সঠিক সময়ে একে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অনেক প্রাণের বিনাশ হতে পারে।
মাদকটি নেওয়ার পর দৃষ্টিভ্রম, বাচালতা, মাংসপেশির অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রয়োজনীয় সংকোচন হয়। এছাড়া দিকভ্রান্ত হওয়া, মাথা ঘোরা, ক্ষুধা লাগা, গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে যাওয়াসহ অনেক সময় জ্ঞান হারায় আসক্ত ব্যক্তি। তাছাড়া প্রলাপ বকা, বিকার আসা, এমনকি মানুষকে হত্যা করার ইচ্ছাও জাগতে পারে। সেবনের মাত্রা বেশি হলে অনেক সময় হাত-পায়ের নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। হাতে-পায়ে ঝিঁঝি ধরা ও অবশ হয়ে যাওয়া দেখা দেয় অনেকের। এর সর্বশেষ পরিণতি মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে যাওয়া ও শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
নিয়মিত বেশি মাত্রায় গাঁজা নিলে সাইকোসিস নামে এক ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এতে চোখে রক্ত জমে যায়। ক্ষুধামন্দা, নির্জীবতা, শরীরের মাংসপেশি শুকিয়ে যাওয়া, অত্যধিক দুর্বলতা, হাত-পা অনবরত কাঁপতে থাকা, পুরুষত্বহীনতা থেকে শুরু করে পুরোপুরি মানসিক রোগ দেখা দেয়।
রানিং এমোক নামে আরও এক ধরনের মানসিক বিপর্যয় দেখা দেয়। সমাজে নির্যাতিত ও বঞ্চিত হওয়ার কল্পনা থেকে এরা হিংসাত্মক ও আগ্রাসী সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে। রানিং এমোক হলে লোকটি চোখের সামনে যাকে পায়, তাকেই তার কল্পিত শত্রু মনে করে অস্ত্র নিয়ে হত্যা করতে পারে। এমন মানসিক অবস্থা কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যাকে সামনে পায়, ক্রমান্বয়ে তাকেই হত্যার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। আবেশ কেটে গেলে এক সময় সে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারে।