কচুরিপানাতে চরাঞ্চলবাসীর জীবনযাত্রা থমকে গেছে

প্রতিনিধি, নরসিংদী: নরসিংদীর মেঘনা নদীর প্রায় পুরো অংশই কচুরিপানায় ভরে গেছে। পুরো নদী কচুরিপানার দখলে থাকায় নৌ-চলাচলে বিঘœসহ প্রায়ই বিভিন্ন রকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে। ফলে জনজীবনে ব্যাপক দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জেলার চরাঞ্চলবাসী, সেই সঙ্গে জীবনযাত্রা অনেকটাই থমকে গেছে। ফলে নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চলের করিমপুর, আলোকবালী, নজরপুর, চরদিঘলদি এবং রায়পুরা উপজেলার প্রান্থশালা, মনিপুরা, শ্রীনগর, বটতলীসহ প্রায় সব স্থানেই স্বাভাবিক নৌ-চলাচলে বিঘœ ঘটছে।

সরেজমিনে নরসিংদীর মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নরসিংদী থানাঘাট থেকে করিমপুর অন?্যদিকে সøুইসগেট এলাকা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার নদীপথ দখল করে নিয়েছে ভাসমান কচুরিপানা। এতে নরসিংদীর সঙ্গে সদর উপজেলার ৪টি এবং রায়পুরার ৮টি চরাঞ্চলসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নৌ-যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। গত প্রায় দুই মাস ধরে ভোগান্তিতে পড়েছে চরাঞ্চলবাসী। দুই-একটি ইঞ্জিনচালিত নৌযান মাঝে মধ্যে চলতে দেখা গেলেও সেগুলো কিছু দূর যেতে না যেতেই ঘন কচুরিপানার মধ্যে আটকা পড়তে দেখা যায়। শুধু তা-ই নয়, অনেক কষ্টে এই ঘন কচুরিপানা ঠেলে নরসিংদী এলেও ঘাটে ভিড়তে পারে না নৌ-যান।

ভুক্তভোগী আলতাফ হোসেন জানান, চরবাসীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, ওষুধ, কাঁচামালের সিংহভাগই আসে নরসিংদী থেকে। নৌকায় এসব আনতে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার পোহাতে হচ্ছে তাদের। নদীর বুকজুড়ে ভাসমান কচুরিপানা থাকায় লঞ্চ, স্টিমার, ইঞ্চিনচালিত নৌকা চলাচলে বিঘœ ঘটাসহ ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। ইতোমধ্যে নরসিংদী থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী কয়েকশ’ স্পিডবোট বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় লোকজন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। আগে যেসব স্থানে যেতে সময় লাগত এক ঘণ্টা এখন সেখানে যেতে সময় লাগছে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টারও বেশি।

রমজান মিয়া নামে এক মাঝি জানান, কচুরিপানার কারণে ঠিকভাবে নৌকা চালাতে পারে না তারা। একটু পরপরই ভাসমান কচুরিপানার স্তূপে আটকে যায় নৌকা। এ সময় লগি বৈঠা দিয়ে আটকে যাওয়া নৌকাকে মুক্ত করতে অনেক বেগ পেতে হয়।

ইদন মিয়া নামে এক স্পিডবোট চালক বলেন, ‘বর্তমানে নদীতে কচুরিপানা এতটাই বেড়েছে, বোট চালানো বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা দুই-চারজন পেটের তাগিদে বোট চালালেও করিমপুর থেকে যাত্রী ওঠানামা করাই। নরসিংদী আর আমাদের যাওয়া সম্ভব হয় না।’

এ বিষয়ে নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নদীতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা মাছের ঘের থেকে এ কচুরিপানা ভেসে আসে। এর জন?্য আমরা অবৈধ দখলদার ও অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদ করার পদক্ষেপ নেব। এ ব?্যাপারে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০