নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি বছর মাথাপিছু ১৫০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট ২২ দশমিক চার মিলিয়ন টন বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ মাথাপিছু বর্জ্য সৃষ্টির হার হবে ২২০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ৪৭ হাজার ৬৪ টনে গিয়ে দাঁড়াবে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। নগর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মৌলনীতি (বিধি-৬) বর্জ্য ক্রমাধিকারÑপ্রত্যাখ্যান, বর্জ্য হ্রাসকরণ, পুনর্ব্যবহার, পুনঃচক্রায়ন, পুনরুদ্ধার, পরিশোধনের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর ফলে নগরে অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হবে, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হবে এবং সর্বোপরি প্রকৃতি ব্যবস্থাপনার গুণগত পরিবর্তন হয়ে একটি সবুজ ও স্বাস্থ্যকর নগর গড়ে উঠবে। গতকাল সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবে ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ২০২১’ বিষয়ক গণশুনানি অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য তানভীর শাকিল জয়ের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রেজাউল করিম বাবলু, অ্যাডভোকেট বেগম খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. সেলিম রেজা ও কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি মাইনউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এসময় সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসকের কনসোর্টিয়াম কো-অর্ডিনেটর সানজিদা জাহান আশরাফীর সঞ্চালনায় ঢাকা কলিং প্রকল্প সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করেন ইনসাইটসের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর সুমন আহসানুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা সম্পর্কে উপস্থাপনা করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী।
এ সময় আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে বাংলাদেশের ১১টি আইন, বিধিমালা ও পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা অতিসম্প্রতি ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১’ প্রণয়ন করেছি। ২০৪১ সালে নগরবাসীর সংখ্যা হবে প্রায় ৮০ শতাংশ এবং ২০২৫ সালে দৈনিক বর্জ্য উৎপন্ন হবে প্রায় ৪৭ হাজার টন। বিশাল এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য দক্ষ জনবলের পাশাপাশি অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। সর্বোপরি অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী বলেন, বর্জ্যকর্মীদের আবাসস্থল ও তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সবার সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সমন্বয়, তাদের পরিকল্পনা ও কাজে এই বিধির শর্তগুলো বিবেচনায় নেয়া জরুরি। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।