প্রতিনিধি, পাবনা:পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জ্বালানি ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান পৌঁছেছে। বিশেষ নিরাপত্তাবলয়ের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায় ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহর রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ার নাগরিকসহ শ্রমিক-কর্মকর্তারা গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নাটোর-কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক দিয়ে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করেছে।
জানা গেছে, ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো আসার সময় মহাসড়কে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তাবলয় ছিল। নিরাপত্তার জন্য ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পাবনা-নাটোর-কুষ্টিয়া মহাসড়ক দিয়ে বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ইউরেনিয়াম পৌঁছানোর পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে রাশিয়া থেকে দ্বিতীয় চালানের ইউরেনিয়াম বিশেষ বিমানে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। প্রথম চালানের মতোই দ্বিতীয় চালান সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে সড়কপথে রূপপুরে নেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচটি চালান দেশে আসবে।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছায়। গতকাল চালানটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে ভার্র্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। ঐতিহাসিক এই কমিশনিংয়ের মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এতে বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণসহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আগামী বছর প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চায়। একই বছর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর আশা করছে তারা।
