Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 6:36 pm

কড়াকড়িতে বেড়েছে সবজির দাম, কমেছে পেঁয়াজের

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোয় পটোল, বেগুন, শিম, ধুন্দল, বরবটি, ঢেঁড়স, লাউ, টমেটোসহ প্রায় সব সবজির দাম বেড়েছে। কভিডের বিধিনিষেধ আরোপের কারণে সবজির গাড়ি কম আসায় এই দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে এক সপ্তাহের লকডাউনের দ্বিতীয় দিন ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও এখন তা আবার বেড়েছে। এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি আবার আগের দামে ফিরে গেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম। এছাড়া পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৮ টাকা কমেছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। শবেবরাতের আগে থেকে এই দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। তবে করোনায় বিধিনিষেধ আরোপের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকায় নেমে এসেছিল। গত বৃহস্পতিবারও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা বিক্রি হয় বেশিরভাগ বাজারে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি গত মঙ্গলবার সোনালি মুরগির দামও কমে। ৩৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এই মুরগির দাম একবারে কমে ২৬০ থেকে ২৪০ টাকায় নেমে আসে। গত কয়েক দিনে এই মুরগির দাম আর পরিবর্তন হয়নি। আর দীর্ঘদিন ধরে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি এখনও ওই দামেই বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির দামের বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বলেন, গতকাল ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ পাইকারিতে দাম বাড়ায় ১৬০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। শুক্রবার হওয়ার কারণে এই দাম বেড়েছে বলে আমাদের ধারণা।

এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সজনের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে সজনের কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে একমাত্র এই সবজিটির দাম কমেছে। অন্যদিকে পটোল, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়সের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম ৭০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

দাম বাড়ার তালিকায় থাকা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। পাশাপাশি পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে ছিল।

বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়লেও ফুলকপি ও বাঁধাকপি আগের মতো ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল, চিচিঙ্গা কিনতেও ভোক্তাদের ৫০ টাকার ওপরে গুনতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে

 ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা। শনা আগের সপ্তাহের মতো কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

বাজার থেকে এখন শাক এক আঁটি কিনতে ১০ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লালশাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমিশাক। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এক আঁটি ডাটা কিনতে লাগছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

সবজির দামের বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ এমনিতে কমে গেছে। এর সঙ্গে এখন লকডাউনের কারণে সবজির গাড়ি কম আসছে। এসব কারণেই সবজির দাম একটু বেড়েছে। ঢাকায় সবজির গাড়ি আসতে সমস্যা হচ্ছে কি নাÑএমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবজির গাড়ি আসতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে বেপারিরাই মাল কম পাঠাচ্ছেন। মাল বেশি পাঠালে যদি ঠিকমতো দাম না পাওয়া যায়, তেমন আশঙ্কা করেই হয়তো বেপারিরা মাল কম আনছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণার পরে হঠাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কেনাকাটা বেড়ে যায়। তাই বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দামও। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম কমতে শুরু করেছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে লকডাউনের কারণে অনেকে চাহিদার চেয়ে বেশি কিনেছে। ফলে দাম বেড়েছিল। এখন কেনাকাটার চাপ নেই। বাজারও স্বাভাবিক রয়েছে। পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ৪০ থেকে ৪২ টাকা ছিল।