কভিডকালে ৪৫% এসএমই প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাঁটাই

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারি কভিড-১৯-এর প্রকোপে উৎপাদন ও আয় কমে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ৪৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে এক দশমিক ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। আংশিক কার্যক্রম চালু রেখেছে ৫১ দশমিক ৮৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এবং ৪৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি কার্যক্রম চালিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রিজম প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২১৬টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ জরিপ চালানো হয়।

গতকাল ‘ইমপ্যাক্ট অব কভিড-১৯ অন সিএমএসএমইস অ্যান্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং দেয়ার রিকোভারি: এভিডেন্স ফ্রম বিএসসিআইসি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

প্রিজম প্রকল্পের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্পোনেন্ট ও ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম (ইআরএফ) এ সেমিনার আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধে জরিপের তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) রিসার্চ ডিরেক্টর মনজুর হোসেন।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কভিডের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এখনও পুরোপুরি রিকভার করতে পারেনি বা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তবে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

জরিপের তথ্য তুলে ধরে মনজুর হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠানগুলোয় কর্মীদের থেকে শ্রমিক বেশি ছাঁটাই হয়েছে। সবচেয়ে বেশি কর্মী ছাঁটাই হয়েছে মেটাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ বা সার্ভিস সেক্টরে। ২০২০ সালের মার্চ-মে লকডাউনে এ খাতের ২২ দশমিক ২২ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। এছাড়া ২০২০ সালের জুন-সেপ্টেম্বরে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ ও অক্টোবর-ডিসেম্বরে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে।

অপরদিকে ২০২০ সালের মার্চ-মে লকডাউনে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে মেটাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ বা সার্ভিস সেক্টরে। এছাড়া ২০২০ সালের জুন-সেপ্টেম্বরে ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ ও অক্টোবর-ডিসেম্বরে ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে।

ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনজি থ্রিংক।

প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী এবং বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, মহামারির ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে এসএমই খাতে উৎপাদন ও বিপণন সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ খাতের হাজারো মানুষের জীবন ও জীবিকা চ্যালেঞ্জে পড়েছে। সরকার অনেক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে এসএমই খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলে, সে প্যাকেজ থেকে দেশের অনেক অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তরা ঋণ পান। এ কারণে সরকার পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গ্রামীণ এলাকার ঋণদান কার্যক্রম সম্প্রসারণে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০