কভিডের মাঝেও দেশে দারিদ্র্য কমেছে: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলনে কভিডের মধ্যেও বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। গত ১৪ এপ্রিল প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট রিকভারি অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স অ্যামিড গ্লোবাল আনসারটেইনটি’ শিরোনামে প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনার পরিস্থিতিতেও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্যহার হ্রাস পেয়ে ১১ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২০ অর্থবছরে ছিল ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।’ গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে বাংলাদেশে অতি দারিদ্র্য হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং দারিদ্র্য হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ এই করোনা মহামারির মাঝেও সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে এবং অর্থনীতিকে চাঙা রাখার জন্য সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সেসব কারণে মানুষের মাথাপিছু আয় যেমন বেড়েছে, একইসঙ্গে দারিদ্র্য হার কমেছে। এটি আমাদের বক্তব্য নয়, এটি বিশ্বব্যাংকের বক্তব্য।’

সম্প্রতি প্রকাশিত আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী জিডিপির নিরিখে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৪১তম অর্থনীতির দেশ, আর পিপিপিতে আমাদের অর্থনীতির অবস্থান আরও ওপরে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই করোনা মহামারির মাঝেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন, ‘দেশে দারিদ্র্য ৪২ শতাংশ।’খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ৪২ শতাংশ ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব এখনও খালেদা জিয়ার আমলের মধ্যেই আছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেটি ৪৮ বিলিয়নে উন্নীত করেছে। বিশ্বে পণ্য, জ্বালানি, পরিবহনÑএসব ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সেই রিজার্ভ থেকে কিছু খরচ হয়েছে, এখন ৪০ বিলিয়ন ডলার আছে, যেটি দিয়ে ছয় মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। কোনো দেশে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকাটাই স্বস্তিদায়ক। সে জায়গায় আমাদের ছয় মাসের রিজার্ভ আছে, যেটি দিয়ে ছয় মাস আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।’

নড়াইলের ঘটনা নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য, ‘আওয়ামী লীগের আমলেই সাম্প্রদায়িক ঘটনা বেশি ঘটেছে।’ এর জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নিয়েই তারা রাজনীতি করেন। তাদের জোটের বিভিন্ন দল প্রকাশ্যে বলে, তারা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়। বিএনপি সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে, যখন নির্বাচন আসে তখন সাম্প্রদায়িক সেøাগান দেয়। আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে এই দেশ ভারত হয়ে যাবে, আওয়ামী লীগ হিন্দুদের দল, কিংবা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দলÑএসব বিএনপিই বলে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে লালন-পালন, পোষণ-তোষণ এগুলোও বিএনপি করে এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হয়।’

‘অতীতের এ ধরনের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সেগুলোর পেছনে বিএনপির ইন্ধন ছিল,’ বলেন ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, বিএনপি ২০০১ সালে নির্বাচনের পর নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে গ্রামের পর গ্রামে নির্যাতন চালিয়েছিল। বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল। কোটালীপাড়া, বরিশালের বানারীপাড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য লঙ্গরখানা, আশ্রয়কেন্দ্র খুলতে হয়েছিল। ধর্মীয় অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক দলের মুখপাত্র হিসেবে মির্জা ফখরুল সাহেব এ ধরনের কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাবেন, সেটিই স্বাভাবিক। যখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, আমাদের সরকার তখনই ত্বরিৎ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কারণ আমাদের দল অসাম্প্রদায়িক দল, আমরা অসাম্প্রদায়িকতা লালন করি।’

নড়াইলের ঘটনার পর সেখানে যে ছেলেটির পোস্টের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটেছে, তার বাবাকে এবং হামলার অভিযোগে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যদেরও গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া চলছে বলে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘এর পেছনে কারা ইন্ধন দিয়েছে, সেটিও বের করা হবে। সুতরাং, অতীতে যেমন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এক্ষেত্রেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০