নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে দিনে শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ মাস পর পাঁচশর নিচে নেমেছে, তবে মৃত্যু আগের দিনের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা আগের দিন ছিল সাত। তাদের নিয়ে কভিড মহামারিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৬৭৪।
গত এক দিনে ৪১৫ জন রোগী শনাক্ত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৮।
গত ১৬ মে’র পর দৈনিক সংক্রমণের এটাই সর্বনি¤œ সংখ্যা। ১৬ মে ৩৬১ রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছে ৫৪৩ জন, তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠল ১৫ লাখ ২৩ হাজার ১৩৪ জন।
এই হিসাবে দেশে এ মুহূর্তে রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার; কভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে জুন-জুলাইয়ে এই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছিল।
বাংলাদেশে কভিডের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ।
গত বছরের শেষ দিকটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ডেল্টা সংক্রমণের বিস্তারে এ বছরের এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। এর মধ্যে জুলাই, আগস্ট ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ। ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট দু’দিনই ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
দৈনিক সংক্রমণের হারও তখন ৩২ শতাংশে উঠেছিল, সেপ্টেম্বর থেকে তা নামত নামতে তিন শতাংশের নিচে চলে এসেছে।
গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দুই দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা আগের দিন দুই দশমিক ৭৭ শতাংশ ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ১৬ হাজার ৯২৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৯ লাখ ৩১ হাজার ৮৪১টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ; মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭৭ শতাংশ। গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ২৬২ জনের মধ্যে কভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৬৩ শতাংশের বেশি।
এক দিনে মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ৯ জন ঢাকা বিভাগের, চারজন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন রংপুর বিভাগের, দুজন ময়মনসিংহ বিভাগের এবং একজন করে মোট দুজন খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো মৃত্যুর খবর আসেনি।
যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। তিনজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং দুজন করে মোট ছয়জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০, ৩১ থেকে ৪০ ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। তাদের মধ্যে ১৭ জন সরকারি হাসপাতালে এবং তিনজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের ১২ জন ছিলেন পুরুষ, আর আটজন নারী।