নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। আগের দিন তিন মাস পর সংক্রমণ ছাড়িয়েছিল হাজারের ঘর। গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংক্রমণ আরও বেড়ে এক হাজার ১৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ছাড়িয়ে গেছে পাঁচ শতাংশ, যা গত ২০ সেপ্টেম্বরের পর এই প্রথম।
গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের তুলনায় কভিড সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু কমেছে। আগের দিন কভিড সংক্রমণ নিয়ে সাতজনের মৃত্যু হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন একজন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৮৫২টি ল্যাবে কভিডের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৫২টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৬৪৩টি।
এসব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য সারাদেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ২০ হাজার ৮৯০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এদিন নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২০ হাজার ২০৪টি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল এক কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৫৪০টিতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮০ লাখ ৭২ হাজার ৬০৫টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৩৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩৫টি।
দেশে আগের দিন এক হাজার ১৪০ জনের শরীরে কভিড সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ১৪৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট কভিড সংক্রমণ শনাক্ত হলো ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৩ জনের শরীরে।
এদিকে, আগের দিন নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল চার দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টাতে এই হার আরও বেড়ে হয়েছে পাঁচ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর সবশেষ নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি ছিল। সে হিসাবে সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় পরে এক দিনে সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশ ছাড়াল।
অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কভিড রোগীদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার রোগীর সংখ্যা কমেছে। আগের দিন কভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ১৯৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা হয়েছে ১৭০ জন। এ নিয়ে দেশে কভিড আক্রান্তদের মধ্যে ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৩৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। সংক্রমণ বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
আগের দিন কভিড সংক্রমণ নিয়ে সাতজন মারা গেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন এক জন। এ নিয়ে দেশে কভিড সংক্রমণ নিয়ে মোট ২৮ হাজার ৯৮ জনের মৃত্যু হলো। সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কভিড সংক্রমণ নিয়ে ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তার।
শনাক্ত হওয়া এক হাজার ১৪৬ জনের মধ্যে শুধু ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা জেলাতেই শনাক্ত হয়েছেন ৯০২ জন। অর্থাৎ, শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৭১ শতাংশই ঢাকা জেলার। আর ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ৯২০ জন।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা জেলাতে ৯০২ জনের শনাক্ত হওয়ার পাশাপাশি ঢাকা বিভাগের অন্য জেলাগুলোর মধ্যে ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে শনাক্ত হয়েছেন দুজন করে, গাজীপুরে চারজন আর রাজবাড়ীতে শনাক্ত হয়েছেন তিনজন। ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলায় আটজন, নেত্রকোনায় একজন আর জামালপুরে শনাক্ত হয়েছেন দুজন।
চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলায় ৮২ জন, কক্সবাজার ও নোয়াখালীতে দুজন করে, রাঙামাটিতে তিনজন, ফেনীতে চারজন, চাঁদপুরে ১১ জন আর কুমিল্লায় শনাক্ত হয়েছেন আটজন।
রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় ২১ জন, নাটোর আর বগুড়ায় পাঁচজন করে, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জে চারজন করে, পাবনায় ১১ জন আর জয়পুরহাটে শনাক্ত হয়েছেন দুজন। রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় ছয়জন আর নীলফামারী ও দিনাজপুরে শনাক্ত হয়েছেন দুজন করে।
খুলনা বিভাগের যশোর জেলায় ১০ জন, বাগেরহাট ও মেহেরপুরে একজন করে, খুলনায় চারজন আর কুষ্টিয়া জেলায় শনাক্ত হয়েছেন সাতজন। বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলায় তিনজন আর পিরোজপুরে দুজন আর সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় শনাক্ত হয়েছেন ৯ জন আর মৌলভীবাজারে শনাক্ত হয়েছেন চারজন।