Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 8:11 pm

কভিডে মৃত্যু পৌনে ছয় হাজার ছুঁইছুঁই

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক দিনে আরও ২৪ জনের মৃত্যুতে দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা পৌনে ছয় হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে; সেই সঙ্গে আরও এক হাজার ৬৯৬ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গতকাল সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এ সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত এক হাজার ৬৯৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ৯৪ হাজার ৮২৭ জন হলো। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৭৪৭ জনে দাঁড়াল।

সর্বশেষ এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ২১ সেপ্টেম্বর, সেদিন এক হাজার ৭০৫ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ১০০ থেকে ১৬৮৪ জনের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে।   

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও এক হাজার ৬৮৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে তিন লাখ ১০ হাজার ৫৩২ জন হয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা সাড়ে তিন লাখ পেরিয়ে যায় ২১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১০ অক্টোবর তা সাড়ে পাঁচ হাজারে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার কোটি ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে; মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১ লাখ ৩১ হাজারের ঘরে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে অষ্টাদশ স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩১তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১০টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৯৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ২২ লাখ ২১ হাজার ৩৬৯টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১৮ জন, নারী ছয়জন। তাদের ২৪ জনই হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, আটজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্য, দুজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

১৪ জন ঢাকা বিভাগের, ছয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন খুলনা বিভাগের ও একজন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া পাঁচ হাজার ৭৪৭ জনের মধ্যে চার হাজার ৪২২ জনই পুরুষ এবং এক হাজার ৩২৫ জন নারী। তাদের মধ্যে দুই হাজার ৯৭৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া এক হাজার ৫৩৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭১৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩১৯ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১২৯ জনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৪৫ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ২৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে দুই হাজার ৯৫১ জন ঢাকা বিভাগের, এক হাজার ১৫০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩৬৭ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪৬২ জন খুলনা বিভাগের, ১৯৭ জন বরিশাল বিভাগের, ২৪১ জন সিলেট বিভাগের, ২৬০ জন রংপুর বিভাগের এবং ১১৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।