নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৪ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের হিসাবে আট মাসে সর্বনিম্ন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯৬৪ জন। গতকাল শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ এই তথ্য জানিয়েছে।
গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৩ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৫৯৯। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৯৬৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে চার লাখ ৫৯ হাজার ৬২০ জন হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৬৮৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার ১৮৪। ইউরোপ-আমেরিকায় শীতে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলেও বাংলাদেশে দিনে শনাক্ত রোগী কম দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার হাজারের নিচে রোগী শনাক্তের কথা জানানোর এক দিন পর সেই সংখ্যা ছয়শ’র ঘরে নেমে এল।
২৪ ঘণ্টার এর চেয়ে কম রোগী সর্বশেষ শনাক্ত হয়েছিল গত ৯ মে, সেদিন ৬৩৬ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারপর থেকে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছিল। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা প্রায় সাত শতাংশ কমেছে। তার সঙ্গে শনাক্ত রোগী ১৭ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে মৃত্যু কমেছে আট শতাংশ, আবার সুস্থতার হারও কমেছে সাড়ে ৩৮ শতাংশ। বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ; তা পাঁচ লাখ পেরিয়ে যায় গত ২০ ডিসেম্বর।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
শুক্রবার ১৭ জনের ?মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা গত ১৪ নভেম্বরের পর সবচেয়ে কম। তবে এক দিন বাদে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৪টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৬টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৪০টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব মিলিয়ে সর্বমোট ১৮০টি ল্যাবে ৯ হাজার ৫০৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩২ লাখ ৪৯ হাজার ৪০২টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার আট দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ২১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৮ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ আর নারী ছয়জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ১৪ জন ঢাকা বিভাগের, তিনজন রংপুর বিভাগের, দুজন করে মোট চারজন চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের, একজন করে মোট দুজন রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া সাত হাজার ৫৯৯ জনের মধ্যে পাঁচ হাজার ৭৮১ জনই পুরুষ এবং এক হাজার ৮১৮ জন নারী। তাদের মধ্যে চার হাজার ১৪৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও এক হাজার ৯২৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮৯১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৮০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৫ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। মৃতদের মধ্যে চার হাজার ১৭৭ জন ঢাকা বিভাগের, এক হাজার ৪১৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৩৪ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৩৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৩৮ জন বরিশাল বিভাগের, ২৯১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৪৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৬৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।