নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এ চতুর্থ ডোজ প্রদান কার্যক্রমে দুই সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ শর্ত থাকছে না। অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর থেকে নিয়মিতভাবেই চলবে টিকা কার্যক্রম। এর আগে ৪৬০ জনকে এ টিকা প্রদান করা হয়। কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হওয়ায় এবার নিয়মিতই দেয়া হবে চতুর্থ ডোজ।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহমেদুল কবীর।
এ সময় গণমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, এরই মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ৪৬০ জনকে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ (চতুর্থ ডোজ) ট্রায়াল দেয়া হয়েছে। আজকে থেকে সব স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে এ সেকেন্ড বুস্টার ডোজের কার্যক্রম চলবে।
তিনি আরও বলেন, চতুর্থ ডোজ-উপযোগী মানুষ আছেন অন্তত চার কোটি। আমরা চাচ্ছি গুরুত্ব অনুযায়ী আপাতত পাঁচটি ক্যাটেগরিতে এ টিকা দেব। এখন পর্যন্ত আমরা যদি উপযোগিতা এবং গুরুত্ব বিবেচনা করি, তাহলে ৮০ লাখের মতো আমাদের মানুষ আছে, যারা টিকা পাবেন।
আহমেদুল কবীর বলেন, পৃথিবীতে প্রায় ৫৬টা দেশে সেকেন্ড বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে একটা মাইলস্টোন অর্জন করেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে এবং দেশের মানুষ ভ্যাকসিন নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। এ কারণেই আমরা সাহস করে সেকেন্ড বুস্টার ডোজ দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ কোটি প্রথম ডোজ, প্রায় সাড়ে ১২ কোটি সেকেন্ড ডোজ এবং তৃতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি মানুষকে।
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডোজ পাওয়ার পর চার মাস অতিবাহিত হয়েছে, এমন ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ দেয়া যাবে। টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী সেকেন্ড বুস্টার ডোজ টিকায় অগ্রাধিকার পাবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী পাবে। স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী, গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধদানকারী মা এবং সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
সম্মুখসারির যোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সব সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, সম্মুখ সারির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সামরিক বাহিনী, বেসামরিক বিমান, রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্ত অপরিহার্য কার্যালয়, সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী, ধর্মীয় প্রতিনিধি (সব ধর্মের), মরদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, জরুরি বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পয়োনিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মুখ সারির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, স্থলবন্দরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা ও উপজেলায় জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় এবং চিকিৎসা-শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিষয়ের ছাত্রছাত্রী।