Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 10:22 am

কভিড রোধে সারাদেশে শুরু গণটিকাদান কর্মসূচি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: কভিড-১৯ প্রতিরোধে গতকাল গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে সরকার। এজন্য গতকাল সকাল ৯টায় ১৫ হাজারের বেশি কেন্দ্রে টিকা দেয়া শুরু করেছে। দেশজুড়ে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি সিটি করপোরেশন এলাকায় চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। প্রথম দিন বাদ পড়া ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ের ওয়ার্ডে টিকা দেয়া হবে আজ ও আগামীকাল। একই সঙ্গে আজ ও আগামীকাল টিকা দেয়া হবে দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায়। ১০ থেকে ১২ আগস্ট ৫৫ বছরের বেশি বয়সী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে টিকাদান কর্মসূচি চলবে। শেয়ার বিজের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ নিয়ে গণটিকাদান কর্মসূচির এ প্রতিবেদন।

চাঁদপুর: সারাদেশে পঁচিশোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী, নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে গতকাল শনিবার সারাদেশের মতো একযোগে চাঁদপুরের সব ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার ওয়ার্ড পর্যায়ে কভিভ-১৯-এর পরীক্ষামূলকভাবে গণটিকাদান শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমে কেন্দ্রগুলোয় মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই জড়োসড়ো হয়ে টিকা নিতে দেখা গেছে। টিকা কার্যক্রমের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সমন্বয় সাধন করছেন চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মো. সাখাওয়াত উল্লাহ।

মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এজন্য জেলার ৬৮টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে একযোগে ক্যাম্পেইন শুরু করা হয়েছে। সিভিল সার্জন মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, এরই মধ্যে লক্ষ করা গেছে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। তাই ক্যাম্পেইন স্থলে মানুষকে নিবন্ধন করতে দেখা গেছে। বয়স্ক ও গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলার ৭৮টি ইউনিয়ন ও সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৮৭টি নির্ধারিত কেন্দ্রে গতকাল টিকা দেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের জন্য সিনোফার্মের ৫১ হাজার ২০০ টিকা ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩২ হাজার টিকা মজুত রয়েছে। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়েত জানান, প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ৬০০ করে করোনা টিকা দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রে টিকা দেয়ার পর চাহিদা ও টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে আগামী ১৪ থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত আবার এ গণটিকা কর্মসূচি শুরু হবে।

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় ইউনিয়ন পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে জেলার ৬৪ ইউনিয়ন ও পাঁচটি পৌরসভার মোট ৯৬টি কেন্দ্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এই গণটিকা দেয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তিনটি বুথে ৬০০ মানুষকে এ টিকা দেয়া হবে। সিভিল সার্জন এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, জেলায় মোট ৬২ হাজার ৪০০ জনকে টিকা দেয়া হবে। কেন্দ্রগুলোয় মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে।

নওগাঁ

গতকাল সকাল ৯টা থেকে নওগাঁর ১১টি উপজেলার ৯৯টি ইউনিয়নে ও তিনটি পৌরসভায় মোট ১১৩টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার ১১টি উপজেলার ৯৯টি ইউনিয়ন, নওগাঁ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড, ধামইরহাট পৌরসভার তিনটি কেন্দ্র ও নজিপুর পৌরসভায় দুটি কেন্দ্রে মোট এক হাজার ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী মাধ্যমে প্রথম দিনে ৬২ হাজার ২০০ জনকে টিকা দেয়া হবে। শহরের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন ডিসি, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা।

বান্দরবান: বান্দরবানে দুটি পৌরসভা ও ৩৩টি ইউনিয়নে টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টায় বান্দরবান পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বালাঘাটায় বিলকিছ বেগম উচ্চ বিদ্যালয় কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। এ সময় অন্যদের মধ্যে পৌরসভার মেয়র, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত ডিসি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও প্যানেল মেয়রসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেরপুর: শেরপুর পৌরসভা কার্যালয়ে মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন পৌর এলাকার টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। জেলায় প্রথম দফায় ৩৩ হাজার ৬০০ জনকে টিকা দেয়া হবে। জেলায় ৫২ ইউনিয়নে ২৫ বছর বয়সী বা তদূর্ধ্বদের টিকা দেয়া হবে। জেলার সব ইউনিয়নের সাবেক ১নং ওয়ার্ডের যেকোনো স্থানে একটি করে কেন্দ্র ও তিনটি বুথ স্থাপন করা হবে। সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মেবাইল ফোন নম্বর নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দেয়া হবে।

ফেনী: ফেনীর ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের টিকা কেন্দ্রগুলোয় টিকাগ্রহীতাদের উপস্থিতি বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। প্রথম পর্যায়ে গ্রামাঞ্চলে টিকা নিয়ে নানা গুজব আর উদাসীনতায় টিকার প্রতি মানুষের বিমুখতা থাকলেও এ পর্যায়ে তা অনেকটাই বদলে গেছে। তাই জেলাজুড়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পৌরসভা ও ইউনিয়নের আওতাধীন টিকা কেন্দ্রগুলোয় মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল। এর আগে সকালে জেলায় গণটিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী।

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিন ছয় হাজার ৬০০ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের টিকাদান কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানার অফিসার ইনচার্জ ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের আজাদী বাজার টিএনটি ক্লাবে টিকাদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি। ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইবিল চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, উপজেলা চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিনুল হাসান, নানুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আজম ও ফটিকছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ।

সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কেন্দ্রগুলোয় সকাল থেকে টিকা নিতে আগ্রহীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকা দেয়ায় অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসেও না নিয়ে ফিরে যান। গতকাল উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের পাঁচটি কেন্দ্রে এবং পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে ১৫টি টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা  নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত), সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং থানার ওসি টিকা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন।