কভিড শনাক্তের হার কমে দৈনিক তিন হাজারের নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে দৈনিক কভিড সংক্রমণের হার কমেছে। ওমিক্রনের দাপট পেরিয়ে সংক্রমণ আরও একটু কমে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজারের নিচে নেমে এসেছে। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত রোগীর হার নেমেছে ১০ শতাংশের নিচে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে এসব জানা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ২৭ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ৫৮৪ জনের শরীরে কভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ২৪ জনের। এক দিনে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ১১ জানুয়ারি, সেদিন দুই হাজার ৪৫৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এরপর ১৩ জানুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত রোগীর হার কমে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ হয়েছে। আগের দিন এই হার ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল।  সর্বশেষ এই হার ১০ শতাংশের নিচে ছিল ১২ জানুয়ারি।

কভিড-১৯-এর নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারে চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে দ্রুত। গত ১২ জানুয়ারি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১০ শতাংশ ছাড়ায়। ২৮ জানুয়ারি তা পৌঁছায় ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ২৯ হাজার ১৫৪ জন। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৯৩১ জনের প্রাণ গেছে এ মহামারিতে। সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৯ হাজার ৯৮৮ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কভিড রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৬২ হাজার ৩৬৯ জন। অর্থাৎ এ-সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছেন। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেননি।

করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশ’র ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে। এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, ফলে নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। একপর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে। মহামারির মধ্যে সার্বিকভাবে শনাক্ত রোগীর হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ, আর মৃত্যুর হার এক দশমিক ৫০ শতাংশ।

গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে এক হাজার ৬১৯ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্ত রোগীর ৬২ শতাংশের বেশি। যে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন ১৭ পুরুষ ও সাত নারী। তাদের মধ্যে ১৪ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের তিনজন, রাজশাহী বিভাগের দুজন, খুলনা বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের তিনজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন। তাদের ১৫ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, দুজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫১ বছর, দুজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।

বাংলাদেশে কভিডের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ নতুন রোগী শনাক্ত হন। প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে কভিডে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৫৮ লাখ ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত রোগী ছাড়িয়েছে ৪২ কোটির বেশি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০