নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিডের সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ‘আতঙ্কিত’না হলেও ‘চিন্তিত’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল রোববার রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) কলেরা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি কভিড নিয়েও কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা আতঙ্কিত না হলেও চিন্তিত। তবে সতর্ক অবস্থায় আছি। আমরা করোনা পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা দ্বিতীয় ডোজ দেয়া প্রায় শেষ করেছি।’ রোববারের মধ্যে দেশের ৭০ শতাংশ নাগরিককে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শেষ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
যারা এখনও কভিড টিকার বুস্টার ডোজ নেননি, তাদের নিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেকেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আমাদের সচেতন হতে হবে। সবাইকেই মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপট কমলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে এসেছিল। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে একপর্যায়ে ২৬ মার্চ তা একশ’র নিচে নেমে এসেছিল। গত ৫ মে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমেছিল চারজনে। শনাক্তের হার এক শতাংশের নিচে ছিল বেশ কিছু দিন। তবে গত ২২ মের পর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। রোববার সকাল পর্যস্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক হাজার ৬৮০ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে দুজনের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের প্রায় সবাইকেই টিকার আওতায় এনেছি। তাতে সংক্রমণ এক শতাংশের নিচে চলে এসেছিল। আমাদের মৃত্যু প্রায় শূন্যের কোঠায় ছিল। কিন্তু এখন আবার সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশে উঠে এসেছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত দেশে ১২ কোটি ৮৯ লাখের বেশি মানুষ কভিড টিকার প্রথম ডোজ এবং তাদের মধ্যে ১১ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছিলেন। আর তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দিয়েছেন দুই কোটি ৮৬ হাজারের বেশি মানুষ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এবারই প্রথম দেশে বড় পরিসরে কলেরার ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এর আগে ট্রায়ালে যেসব এলাকায় টিকা দিয়েছি, সেখানে কলেরার প্রাদুর্ভাব একদম কমে গেছে। একসময় কলেরা ও ডায়রিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। এখন তা হয় না, এর পেছনে সরকার ও আইসিডিডিআর,বির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।’ প্রতিটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে কলেরা-ডায়রিয়া ইউনিট চালুর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সিলেটসহ বন্যাকবলিত এলাকায় যাতে ডায়রিয়া ও কলেরা না ছড়ায়, সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রবাসীদেরও এই টিকা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।