নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে জনংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে তা ক্রমেই কমছে। ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র এক দশমিক ১২ শতাংশে। তবে ক্রমেই বাড়ছে জনসংখ্যার ঘনত্ব। ১৯৭৪ সালে দেশে জনসংখ্যার যে ঘনত্ব ছিল, ২০২২ সালে তা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন বেড়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোয়। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে।
জনশুমারির তথ্য বলছে, দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গড় হার ক্রমেই কমছে ও জনসংখ্যার ঘনত্ব বাড়ছে। ১৯৭৪ সালে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল দুই দশমিক ৫২ শতাংশ। ১৯৮১ সালে তা কমে হয় দুই দশমিক ৩২ শতাংশ, ১৯৯১ সালে দুই দশমিক ১৭, ২০০১ সালে এক দশমিক ৫৯, ২০১১ সালে এক দশমিক ৩৭ ও ২০২২ সালে এক দশমিক ১২ শতাংশ। ১৯৭৪ সালে দেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫৩৫ জন। ১৯৮১ সালে তা বেড়ে হয় ৫৯০ জন, ১৯৯১ সালে ৭২০ জন, ২০০১ সালে ৮৪৩ জন, ২০১১ সালে ৯৭৬ জন ও ২০২২ সালে ১ হাজার ১১৯ জন।
গত দশকে গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনের চিত্র উঠে এসেছে জনশুমারির প্রতিবেদনে। এতে দেখা যায়, ২০১১ সালে গ্রামের জনগোষ্ঠী ছিল ১১ কোটি ৪৭ লাখ ও শহরে ছিল তিন কোটি ৪১ লাখ। তবে ২০২২ সালে মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে শহরে বসবাস করছে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ। ওই সময় গ্রামে বসবাস করত ১১ কোটি ৬১ লাখ জন। অর্থাৎ ১১ বছরে পল্লি এলাকায় জনসংখ্যা বেড়েছে মাত্র ১৪ লাখ। অথচ একই সময়ে শহরে জনসংখ্যা বেড়েছে এক কোটি ৮৬ লাখ।
মোট জনসংখ্যার মধ্যে নারী-শিশু অনুপাত কমতেছে। ১৯৯১ সালে দেশে এ অনুপাত ছিল ৭৪২। ২০০১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫১৯, ২০১১ সালে ৩৯২ ও ২০২২ সালে ৩৩২ দশমিক ৩৮। আবার দেশে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর হারও দ্রুত কমছে। ১৯৯১ সালে দেশে এ অনুপাত ছিল ১০২ দশমিক ০৬ শতাংশ। ২০০১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৮২ দশমিক ৭০ শতাংশ, ২০১১ সালে ৭৩ শতাংশ ও ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৬৩ শতাংশ
জনশুমারি অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা রয়েছে ঢাকা বিভাগে। এর বিভাগে মোট জনসংখ্যার ২৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ তথা চার কোটি ৫৬ লাখ মানুষ বাস করে। পরের অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগের জনসংখ্যা তিন কোটি ৪২ লাখ বা ২০ দশমিক ১৩ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যা রাজশাহী বিভাগে। এ বিভাগে দুই কোটি আট লাখ বা ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ বাস করে।
পরের অবস্থানগুলোর মধ্যে রংপুর বিভাগের জনসংখ্যা এক কোটি ৮০ লাখ, খুলনা বিভাগের এক কোটি ৭৮ লাখ, ময়মনসিংহের এক কোটি ২৬ লাখ, সিলেটে এক কোটি ১৪ লাখ ও বরিশাল বিভাগে ৯৩ লাখ। ২০২২ সালে দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ, ২০১১ সালে যা ছিল ১৪ কোটি ৯৮ লাখ।
এবারই প্রথম দেশের জনসংখ্যার মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। জনশুমারি অনুযায়ী, নারীদের সংখ্যা দেশে আট কোটি ৫৭ লাখ আর পুরুষের সংখ্যা আট কোটি ৪১ লাখ। নারী-পুরুষ অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক শূন্য সাত। তবে দশক ভিত্তিতে ক্রমেই নারীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, নারী-পুরুষ অনুপাত ছিল ১০০ দশমিক ৩০। সে সময় মোট জনসংখ্যার মধ্যে নারী ছিল সাত কোটি ৪৮ লাখ ও পুরুষ সাত কোটি ৫০ লাখ। এছাড়া ২০০১ সালে নারী-পুরুষ অনুপাত ছিল ১০৬ দশমিক ৩৫ ও ১৯৯১ সালে ১০৬ দশমিক ১০।
জনশুমারি অনুযায়ী, ১১ বছরে দেশে মুসলমানের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১১ সালে মুসলমান জনগোষ্ঠী ছিল ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১ দশমিক ০৮ শতাংশ। আর ২০১১ সালের হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী আট দশমিক ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে সাত দশমিক ৯৬ শতাংশ। এদিকে, বস্তিতে বসবাসকারীর সংখ্যা ১৭ লাখ ৩৬ হাজার আর ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫ জন। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৫০ হাজার।
২০২২ সালে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ১১ লাখ। ২০১১ সালে ছয়টি সিটি করপোরেশনে ছিল এক কোটি ১৪ লাখ। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে, প্রায় ৬০ লাখ। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার জনসংখ্যা ৪৩ লাখ। ২০১১ সালে দুই করপোরেশন একত্রে ঢাকা সিটি করপোরেশন ছিল, যার জনংখ্যা ছিল ৬৯ লাখ ৭০ হাজার। অর্থাৎ ১১ বছরে ৩৩ লাখ জনসংখ্যা বেড়েছে ঢাকায়।
অন্যান্য সিটি করপোরেশনের মধ্যে চট্টগ্রামে ৩২ লাখ ৩০ হাজার, গাজীপুরে ২৬ লাখ ৭৭ হাজার, নারায়ণগঞ্জে ৯ লাখ ৬৭ হাজার, খুলনায় সাত লাখ ২০ হাজার, রংপুরে সাত লাখ আট হাজার, ময়মনসিংহে পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার, রাজশাহীতে পাঁচ লাখ ৫৩ হাজার, সিলেটে পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার, কুমিল্লায় চার লাখ ৪০ হাজার ও বরিশালে চার লাখ ১৯ হাজার।
বৈবাহিক অবস্থার ক্ষেত্রে জনশুমারিতে বিচিত্র ধরনের তথ্য উঠে এসেছে। ২০২২ সালে পুরুষদের মধ্যে অবিবাহিত ছিল ৩৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ২২ দশমিক ০৪ শতাংশ। আর বিবাহিতদের মধ্যে পুরুষ ৬২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও নারী ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে ১ শতাংশেরও কম বিপত্নীক। তবে নারীদের মধ্যে সাড়ে ৯ শতাংশ বিধবা। তালাকপ্রাপ্ত ও দাম্পত্য বিচ্ছিন্নদের মধ্যেও পুরুষের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম।
এদিকে শহরের তুলনায় পল্লি এলাকায় নারী-পুরুষ উভয়ই তুলনামূলক কম বয়সে বিয়ে করে থাকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে বিবাহের গড় বয়স শহরে প্রায় ২৬ বছর ও পল্লি এলাকায় প্রায় ২৫ বছর। নারীদের ক্ষেত্রে এ বয়স যথাক্রমে ২০ বছর ও ১৯ বছর।
জনশুমারি অনুযায়ী, স্বাক্ষরতার হার ক্রমেই বাড়ছে। ১৯৭৪ সালে দেশে স্বাক্ষরতার হার ছিল ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। তবে গত ১১ বছরে এ হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ২০১১ সালে দেশে স্বাক্ষরতার হার ছিল ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ ও ২০০১ সালে ৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। বর্তমানে স্বাক্ষরতার হারের মধ্যে পুরুষের হার ৭৬ দশমিক ৭১ শতাংশ ও নারীদের সংখ্যা ৭২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর শহর এলাকায় স্বাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৪৫ শতাংশ, পল্লি এলাকায় যা ৭১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
শিক্ষাব্যবস্থায় এক ধরনের পরিবর্তন চোখে পড়ছে এবারের জনশুমারির ফলাফলে। ২০১১ সালে দেশে সাধারণ শিক্ষার হার ছিল (৫ বছর তা তদূর্ধ্ব) ৯৩ দশমিক ৭১ শতাংশ ও ধর্মীয় শিক্ষা পাঁচ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ২০২২ সালে সাধারণ শিক্ষার হার (৫ বছর তা তদূর্ধ্ব) কমে দাঁড়িয়েছে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ ও ধর্মীয় শিক্ষা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত দশমিক ১৯ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষার হার মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকলেও এবার অন্যান্য শিক্ষার হার ছিল দুই দশমিক ৭৪ শতাংশ, যা ২০১১ সালে ছিলই না।
জনশুমারির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে কৃষি খাতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী (১০ বছর তা তদূর্ধ্ব) ৩৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, শিল্পে ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ ও সেবা খাতে ৪৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর কর্মে নিয়োজিত মানুষ ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ, গৃহস্থালির কাজ করে ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ, কাজ খুঁজছে এক দশমিক ৬৫ শতাংশ ও কাজ করে না ২৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। এছাড়া ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে যারা শুমারিকালে কোনোরূপ শিক্ষা, অর্থনৈতিক কাজ বা প্রশিক্ষণে নিয়োজিত ছিলেন না এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১ কোটি আট লাখ, যা বর্ণিত বয়সী মোট জনসংখ্যার ৩৪ দশমিক ২৬ শতাংশ।
দেশে ৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫৫ দশমিক ৯০ শতাংশের নিজস্ব মোবাইল ফোন রয়েছে। অন্যদিকে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৬৯ দশমিক ৯৩ শতাংশের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য মোবাইল ফোন রয়েছে। দেশে ৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনগোষ্ঠীর ৩০ দশমিক ৬৯ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। অন্যদিকে, দেশে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৩৬ দশমিক ৯২ শতাংশ।
১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাদের একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং শুমারি পূর্ববর্তী ১২ মাসে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কমপক্ষে একবার আর্থিক লেনদেন করেছেন তাদের শতকরা হার ২৫ দশমিক ৩৫। ওই একই বয়সীদের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীর হার ৩৯ দশমিক ১১ শতাংশ।
জনশুমারি বলছে, বিদেশে গমন ও ফেরত আসায় প্রথমে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এর পরের অবস্থানে ঢাকা বিভাগ। শুমারিকালীন দেশের ৫০ লাখ ৫৩ হাজার জন বিদেশে অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ২০ লাখ ৫২ হাজার ও ঢাকা বিভাগের ১৪ লাখ ৩১ হাজার জন বিদেশে ছিলেন। আবার ফেরত আসাদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের এক লাখ ৫৪ হাজার জন ও ঢাকার এক লাখ ৩৩ হাজার জন রয়েছেন। এদিকে শুমারির সময় দেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ছিলেন ২৭ হাজার ৮৪২ জন।
দেশে মোট খানার (হাউসহোল্ড) চিত্রও জনশুমারিতে উঠে এসেছে। গত বছর দেশে মোট খানার সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ১০ লাখ, যার মধ্যে ২ কোট ৭৮ লাখ পল্লি এলাকায় ও ১ কোটি ৩২ লাখ শহর এলাকায় অবস্থিত। ভাসমান ছাড়া দেশে মোট খানার মধ্যে সাধারণ খানা ৪ কোটি দুই লাখ ৫৭ হাজার ৬৭৮, প্রাতিষ্ঠানিক খানা ৪৭ হাজার ৩২২ ও অন্যান্য খানার সংখ্যা ৬ লাখ ৮৪ হাজার।
মোট সাধারণ খানার মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৭ দশমিক ৯৯ শতাংশের প্রধান বসতঘরের মেঝে মাটি, বালি বা কাদা দিয়ে তৈরি এবং ৪৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ সিমেন্ট, কংক্রিট, ইট বা পোড়ামাটি দিয়ে তৈরি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ খানার প্রধান বসতঘরের দেয়াল সিমেন্ট বা কংক্রিট, ইট বা পোড়ামাটি দিয়ে তৈরি। অন্যদিকে ৪২ শতাংশের বসতঘরের দেয়াল ধাতব টিন, সিআই শিট বা ঢেউটিন দিয়ে তৈরি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ৭৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ খানার বসতঘরের ছাদ ছাউনি ধাতব টিন, সিআই শিট বা ঢেউটিন দিয়ে তৈরি। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ বসতঘরের ছাদ সিমেন্ট, কংক্রিট বা টালি দিয়ে তৈরি।
জাতীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক খানার প্রধান বসতঘরের কাঠামো কাঁচা ৫৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এর বসতঘরের কাঠামো পাকা ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ এর কাঠামো আধাপাকা। দেশে সর্বমোট বাসগৃহের সংখ্যা তিন কোটি ৫৬ লাখ ২১ হাজার ৬৮৭টি। এর মধ্যে ২ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮২২টি পল্লিতে ও ৭৯ লাখ ৭৪ হাজার ৮৬৫টি শহরে অবস্থিত। দেশের ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ খানা নিজস্ব মালিকানাধীন বাসগৃহে বসবাস করে।
দেশের ৮৬ দশমিক ৫১ শতাংশ খানার খাবার পানির উৎস গভীর বা অগভীর টিউবওয়েল। বাকি অংশের খাবার পানির উৎস সাপ্লাইয়ের পানি। জাতীয় পর্যায়ে ৫৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ খানা টয়লেট ব্যবহারের পর পানি ঢেলে নিরাপদ নিষ্কাশন করে। সø্যাবসহ পিট ল্যাট্রিন বা ভেন্টিলেটেড ইমপ্রুভড ল্যাট্রিন বা কম্পোস্টিং ল্যাট্রিন ব্যবহার করে ২১ দশমিক ৯৭ শতাংশ খানা। দেশে ৭৩ দশমিক ২৫ শতাংশ খানায় ‘একক’ টয়লেট ব্যবহার করা হয় এবং ৬৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ খানায় সাবান ও পানিসহযোগে হাত ধোয়ার পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের মোট ৯৯ দশমিক ২৪ শতাংশ খানায় বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ রান্নার জ্বালানির উৎস কাঠ, খড়ি বা লাকড়ি, যা ৫৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ খানার রান্নার জ্বালানির প্রধান উৎস সাপ্লাই গ্যাস, যা দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান্নার জ্বালানির উৎস। দেশে জাতীয় পর্যায়ে প্রবাসী আয় গ্রহণকারী খানা সর্বমোট ৩৯ লাখ ৫০ হাজার ১৫৫টি, যার মধ্যে সর্বাধিক ৪২ দশমিক ৪৩ শতাংশ খানার অবস্থান চট্টগ্রামে। খানার গড় আকার ২০২২ সালে হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৮, যা ১৯৭৪ সালে ছিল ৫ দশমিক ৬। বর্তমানে দেশে ৪ সদস্যবিশিষ্ট খানা রয়েছে সর্বাধিক ১০ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার, যা মোট খানার ২৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ।