কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ  

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। পেঁয়াজ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে গতকাল পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে, যা অব্যাহত আছে কয়েক সপ্তাহ ধরে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে সবজি এবং মাছসহ সব ধরনের পণ্য চড়া দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম বাড়ার যুক্তি হিসেবে প্রথম দিকে বৃষ্টিকে দায়ী করা হলেও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের ঘাটতিকেই দায়ী করছেন বিক্রেতারা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করা হলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রফিক জানান, নতুন মৌসুমের অল্পস্বল্প পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে কিছুদিন পর। তখন দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ হতে সময় লাগবে। তাই দ্রæত দাম নাও কমতে পারে। পেঁয়াজের দাম বাড়তি হলেও স্বস্তি ফিরেছে কাঁচামরিচে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৪০ টাকা কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের বাইরে অন্য কোনো দেশ থেকে আমদানি করে পেঁয়াজের বাজার সামাল দেওয়ার সুযোগ নেই। তাদের দাবি, মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে। পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ নেই, কারণ দাম সেখানেও চড়া।

অন্যদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম কিছুটা বাড়লেও আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদিপণ্যের দাম। বাজারে কেজিপ্রতি চীনের আদা ১৪০ ও কেরালা আদা ১৫০ টাকা, ছোলা ৮৫, দেশি মুগ ডাল ১৩০, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০, মাষকলাই ১৩৫, দেশি মসুর ডাল ১২৫ ও ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে কেজিপ্রতি দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০, শুকনা মরিচ ২০০, লবঙ্গ এক হাজার ৫০০, এলাচ এক হাজার ৬০০ ও হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজিপ্রতি দেশি রসুন ১১০, ভারতীয় রসুন ১১০ ও আলু কেজিপ্রতি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্যতেলের দাম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। গতকাল ব্র্যান্ডভেদে পাঁচ লিটারের বোতল ৫৩০ থেকে ৫৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

সবজির বাজার ঘুরে বেগুন কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা, শিম ১৪০, হাইব্রিড টমেটো ১৬০, দেশি টমেটো ১০০, শসা ৬০, চালকুমড়া ৫০-৫৫, কচুর লতি ৬০-৬৫, পটোল ৬০, ঢেঁড়স ৭০, ঝিঙ্গা ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৬০, পেঁপে ৪০-৫০, কচুরমুখী ৬০ ও আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতিটি ফুলকপি ৩৫, বাঁধাকপি ৩০, লেবু হালিপ্রতি ২০ থেকে ৪০, পালংশাক আঁটিপ্রতি ২০, লালশাক ২০, পুঁইশাক ৩০ ও লাউশাক ৩০ টাকা।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম দু-এক টাকা কমেছে। গতকালের বাজারে মোটা স্বর্ণা চাল প্রতিকেজি ৪৪ ও পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৫৮-৬০, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৬-৫৮, আমদানি করা ভারতীয় বিআর-২৮ ৪৮, দেশি বিআর-২৮ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। নাজিরশাইল (কাটারি) ৬৩, নাজিরশাইল (নরমাল) ৬৫, পাইজাম চাল ৪৮, বাসমতি ৫৩ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতিকেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০, কাতলা ৩৫০-৪০০, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ ও চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা। পাঙ্গাশ প্রতিকেজি ১৫০-২৫০, টেংরা ৬০০, মাগুর ৬০০-৮০০, প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা। আর বাজারে মাঝারি আকারের ইলিশ হালিপ্রতি এক হাজার ৬০০ টাকা।

এদিকে ছোট দেশি মুরগির দাম আগের বাড়তি দামে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৩০-১৩৫, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা ও পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫০০ এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০