কমছে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে লোডশেডিং!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এরপর কয়েকদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল গড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের আশপাশেই। রাতে পিক আওয়ারের সময় তা সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। কখনও তা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি পৌঁছায়। এতে লোডশেডিংয়ের তীব্রতা কিছুটা কমে এসেছিল।

যদিও গত দুদিন ধরে কমছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এতে বেড়ে গেছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। বিশেষ করে গতকাল তা তীব্র আকার ধারণ করে। এতে চলমান তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, রোববার রাত ৮টায় লোডশেডিং ছিল ৮৯৮ মেগাওয়াট, ৯টায় ছিল এক হাজার ৭২ ও ১০টায় এক হাজার ৮৫ মেগাওয়াট। রাত ১১টায় তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৫১৬ মেগাওয়াট ও রাত ১২টায় এক হাজার ৭১৭ মেগাওয়াট। রাত ১টায় লোডশেডিং করা হয় এক হাজার ৭৩৯ ও ২টায় এক হাজার ৭৮৪ মেগাওয়াট। রাত ৩টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৬০২ ও ৪টায় এক হাজার ৫৭২ মেগাওয়াট। ভোর ৫টায় এক হাজার ৪২৩, ৬টায় এক হাজার ৩৬৩ মেগাওয়াট ও সকাল ৭টায় এক হাজার ৩১৯ মেগাওয়াট।

গত কয়েকদিন দেখা গেছে, মধ্যরাতে লোডশেডিং বাড়লেও ভোর ৫টা থেকে কমতে শুরু করে এবং বেলা ১১টা পর্যন্ত কিছুটা কমই থাকে। তবে গতকালের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। গতকাল শেষ রাতেও লোডশেডিং তেমন একটা কমেনি। বরং সকাল ৭টার পর থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করে। সকাল ৮টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৪৪১ মেগাওয়াট, ৯টায় এক হাজার ৫৭৮ মেগাওয়াট, ১০টায় এক হাজার ৫৯৪ মেগাওয়াট, ১১টায় এক হাজার ৬২১ মেগাওয়াট ও দুপুর ১২টায় এক হাজার ৮৬৪ মেগাওয়াট।

এদিকে গতকাল দুুপুর ১টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৯১১ মেগাওয়াট, ২টায় দুই হাজার ৪১ মেগাওয়াট, বেলা ৩টায় দুই হাজার ৩৬৬ মেগাওয়াট, বিকাল ৪টায় দুই হাজার ৩৪৮

মেগাওয়াট ও ৫টায় দুই হাজার ১১৫ মেগাওয়াট। যদিও এর আগের দুদিন এ সময় লোডশেডিং অনেক কম ছিল। ২৭ এপ্রিল দুপুর ১টায় লোডশেডিং ছিল ৯৯২ মেগাওয়াট, ২টায় এক হাজার ১৬৭ মেগাওয়াট, বেলা ৩টায় এক হাজার ১৯৫ মেগাওয়াট, বিকাল ৪টায় এক হাজার ২২০ মেগাওয়াট ও ৫টায় এক হাজার ২১০ মেগাওয়াট।

পিডিবির কর্মকর্তারা জানান, গতকাল তাপমাত্রা ২৭ এপ্রিলের চেয়ে বেশি থাকায় ঢাকাসহ সারাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। তবে জ্বালানি সংকটে এ সময় তেল, গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ২৭ এপ্রিলের চেয়ে কম। এতে গতকাল হঠাৎ করেই লোডশেডিংয়ের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর ২৬ এপ্রিলের তুলনায় তা প্রায় পাঁচগুণ হয়ে যায়। ২৬ এপ্রিল দুপুর ১টায় লোডশেডিং হয়েছিল ৩৬০ মেগাওয়াট, ২টায় ৪৮৯ মেগাওয়াট, বেলা ৩টায় ৪৫৬ মেগাওয়াট, বিকাল ৪টায় ৬৪২ মেগাওয়াট ও ৫টায় ৪৭১ মেগাওয়াট।

পিডিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৭ এপ্রিল রাত ৮টায় (পিক আওয়ার) বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৮১০ মেগাওয়াট। যদিও ওই সময় চাহিদা ছিল ১৬ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট। এতে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়। তবে গতকাল রাত ১টায় উৎপাদন নামে ১৩ হাজার ৮৯৭ মেগাওয়াটে। অথচ ওই সময় চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ৭৭০ মেগাওয়াট। গতকাল সকাল ৮টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও কমে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের নিচে নেমে যায়।

বিদ্যুৎ উৎপাদন দুপুরে বাড়লেও ১৩ হাজার ৩০০ থেকে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যেই ছিল। যদিও সে সময় চাহিদা বেড়ে ১৫ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াটের মধ্যে ওঠানামা করে। অথচ ২৭ এপ্রিল বিদ্যুতের চাহিদা ছিল দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ৮০০ থেকে ১৫ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের মধ্যেই। তবে ওই সময় উৎপাদন করা হয় ১৩ হাজার ৭০০ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ গতকাল চাহিদা বেড়ে গেলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পায়। এতে লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছায়।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০