কমলাপুরে ভিড়, টিকিট না পেয়ে ভোগান্তি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাস-ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির ডাকা ধর্মঘটের কারণে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গতকাল সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট মিলছিল না। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন অনেকে। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন চাকরির জন্য আসা পরীক্ষার্থীরা।

দুপুর আড়াইটায় আলী হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, সাধারণত তিনি বাসে চলাচল করেন। বাস বন্ধ থাকায় ট্রেনে করে বাড়িতে যেতে কমলাপুরে এসেছেন। টিকিট না পেয়ে তিনি বেশ বিপাকে পড়েছেন।

তার গন্তব্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সকালে নরসিংদী থেকে কমলাপুর এসেছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, নরসিংদী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরাসরি ট্রেনে যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই কমলাপুরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। প্রায় দুই ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষার পর যখন কাউন্টারের কাছে গেলেন, তখন তাকে জানানো হয়, টিকিট শেষ হয়ে গেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আলী হোসেনের মতো কয়েকশ মানুষ কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে টিকিট পাননি।

স্টেশনে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য বলেন, সকাল থেকেই কমলাপুরে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। বাস বন্ধ থাকায় সব মানুষ ট্রেনে করে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে টিকিটের সীমাবদ্ধতা থাকায় অনেকেই অপেক্ষার পর ফিরে গেছেন।

পরিসংখ্যান ব্যুরোতে চাকরির পরীক্ষা দিতে গতকাল সকালে ঢাকায় এসেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব চিটাগাং (আইআইইউসি) শিক্ষার্থী নাইমুল। স্টেশনে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে এই শিক্ষার্থী টিকিট পাননি।

কীভাবে ঢাকায় এলেনÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বাসে করে রওনা দিয়েছিলেন। গতকাল সকাল ৭টায় ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। ঢাকায় এসে জানতে পারলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। পরে পরীক্ষা শেষে কমলাপুরে এসে দেখেন, টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকায় পৌঁছে মিরপুরের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতেও বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বলে জানান এই শিক্ষার্থী।

নাইমুলের মতো শত শত শিক্ষার্থী নিজ গন্তব্যে ফিরতে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিড় করছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই টিকিট পাচ্ছেন না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর যারা ঘরে ফেরার টিকিট পেয়েছেন, তাদের বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে। টিকিট পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। আবার বিশেষ ব্যবস্থায় কয়েকজন শিক্ষার্থী অপেক্ষার পর টিকিট পেয়েছেন।

এমন একজন শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন। চাকরির পরীক্ষা দিতে রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি। আনোয়ার বলেন, জরুরি প্রয়োজনে স্টেশন কর্তৃপক্ষ টিকিট বিক্রি করে। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ওই টিকিট কিছুটা বেশি দামে নিতে হয়। সেখানেও অনেক ভিড় ছিল। হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে এই চাকরিপ্রার্থী বলেন, ৪০ মিনিট চেষ্টার পর তিনি রাজশাহী যাওয়ার টিকিট পেয়েছেন।

অন্য ছুটির দিনের তুলনায় গতকাল যাত্রীদের বেশি চাপ ছিল বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে রেলের ওপর চাপ পড়ছে। অন্য শুক্রবারে এত যাত্রী দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, মহামারির কারণে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। এজন্য মানুষ সমস্যায় পড়েছে। তবে যেসব যাত্রীর ঘরে ফেরা খুবই জরুরি, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রি করা হয়। ওই পদ্ধতিতে সকাল থেকেই টিকিট বিক্রি হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০