কমলা হ্যারিসের নতুন অর্থনৈতিক বার্তা

শেয়ার বিজ ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক সপ্তাহ আগে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে তার নিজের বক্তব্য তুলে ধরছেন। তিনি শিশু দারিদ্র্যমোচন, শ্রমিক ইউনিয়নকে উন্নত করা, স্বাস্থ্য ও শিশু পরিষেবার খরচ কমানো এবং অবসরগ্রহণের পর ‘মর্যাদা’ সুরক্ষার ব্যাপারে জোর দেন। খবর: ভয়েস অব আমেরিকা।

এসব কারণে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতি নিয়ে কমলা হ্যারিসের কর্মকাণ্ড দলের এই সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর জন্য হতে পারে বড় সুযোগ কিংবা সম্ভাব্য ঝুঁকি। উইসকনসিন, ইন্ডিয়ানা কিংবা টেক্সাস রাজ্যে দেয়া ভাষণে কমলা একবারের জন্যও মূল্যস্ফীতির বিষয়টি উল্লেখ করেননি। এই মূল্যস্ফীতি হচ্ছে বড় রকমের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ যা বাইডেন প্রশাসনকে বিপর্যস্ত করেছে এবং বাধ্য হয়েই তিনি তার মন্তব্যগুলোয় দৈনন্দিন বাজার, জ্বালানি তেল, আবাসনের ও পরিবহনের খরচ নিয়ে ভোটদাতাদের কষ্টের কথা ক্রমাগত স্বীকার করে গেছেন।

হ্যারিস আরও বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এমন সব বিষয়ে যাকে তিনি ভবিষ্যতের বলে মন্তব্য করছেন। আমেরিকান ফেডারেশন অব টিচার্সে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের চিন্তায় রয়েছে এমন এক স্থান যেখানে প্রত্যেকটি ব্যক্তির শুধু নিজেকে চালিয়ে নেয়ার নয়, বরং এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। আমরা এমন এক ভবিষ্যৎ দেখতে চাই যেখানে কোনো শিশুকেই দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হতে না হয়, প্রত্যেক বয়সি মানুষ মর্যাদার সঙ্গে অবসর নিতে পারেন এবং যেখানে প্রতিটি শ্রমিকের ইউনিয়নে যোগ দেয়ার স্বাধীনতা থাকবে।

তবে রিপাবলিকানরা মূল্যস্ফীতির জন্য হ্যারিসকে দোষারোপ করেছেন। এর আগে মূল্যস্ফীতি নিয়ে বাইডেনকে দোষারোপ করতেন। দলটির নেতারা ডেমক্রেটিক দলের প্রশাসনের অধীনে উচ্চমূল্যের সার্বিক পরিণতির ওপর জোর দিচ্ছেন। শ্রম বিভাগের তথ্যে দেখা গেছে, বাইডেন দায়িত্ব নেয়ার পর মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ। অথচ গড়ে প্রতি ঘণ্টার আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
রিপাবলিকান দলের নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলছেন, এই মূল্যস্ফীতিতে হ্যারিসের অবদান রয়েছে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে এ কথা উল্লেখ করেননি যে, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে হ্যারিসের ভূমিকা কী।
সিনেটে সংখ্যালঘু দলের নেতা কেন্টাকির রিপাবলিকান মিচ ম্যাককোনেল বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস তার প্রশাসনের রেকর্ড বহন করছেন। গত চার বছরের ব্যর্থতায় তার আঙুলের ছাপ রয়েছে।

হ্যারিসের সঙ্গে কাজ করেছেন এমন অতীত ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ধারণা, মূল্যস্ফীতি নিয়ে তার (হ্যারিস) সমালোচনা টিকবে না। কারণ অনেক ভোটদাতা যাদের প্রতিনিধিত্ব তিনি করছেন তারা প্রায় আট বছর পরে নতুন সুরে কথা বলছেন। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা বাইডেনের ওভাল অফিসে প্রায় আট বছর পর এমন কথা শোনা যাচ্ছে। তাই এখন হ্যারিসের জন্য অর্থনৈতিক ব্যাপারে তার নিজের নীতির অবস্থান তুলে ধরার সময় এসেছে। ওই কর্মকর্তাদের কেউ কেউ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হ্যারিস সম্ভবত বাইডেনের ২০২৫ সালের বাজেট প্রস্তাব অনুসরণ করবেন। ওই প্রস্তাবে করপোরেট ট্যাক্স ২৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৭ সালে ট্রাম্পের সময়ে এ হার ছিল ২১ শতাংশ।

তাই কমলার আবির্ভাবকে অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ জানায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ঘটে ২ দশমিক ৮ শতাংশ।
হ্যারিসের সাবেক ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা ইয়াসমিন নেলসন বলেন, মনের দিক দিয়ে তিনি একজন পুঁজিবাদি; তিনি চান ব্যবসা ভালোভাবে চলুক। তবে তিনি উপলব্ধি করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ের চেয়ে পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে এসেছে। তিনি চান সম-প্রতিযোগিতা। ট্রাম্প ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ওহাইও’র সিনেটর জেডি ভ্যান্স বাইডেনের চাইতে হ্যারিসকে উদারপন্থি বলে তুলে ধরছেন। এর অর্থ হচ্ছেÑহ্যারিস সৌর, বায়ু ও অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির অনুকূলে জীবাশ্ম জ্বালানি নিষিদ্ধ করতে চান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০