Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:25 pm

কম্প্রেসারের তিন ইউরোপীয় ব্র্যান্ড কিনছে ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি ইউরোপের বিখ্যাত কম্প্রেসার উৎপাদনকারী তিনটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কিনছে। নিলামে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে কোম্পানিটি ইতালির প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড এসিসি, জানুসি ইলেক্ট্রোমেকানিকা (জেডইএম) এবং ভার্ডিচারের (ভিওই) কম্প্রেসার ম্যানুফ্যাকচারিং লাইন কিনে নিতে সক্ষম হয়েছে। একইসঙ্গে কোম্পানিটি একটি সহযোগী কোম্পানি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ইতালিতে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠিত তিনটি কম্প্রেসার উৎপাদনকারী ব্র্যান্ড এসিসি, জেডইএম ও ভিওই কিনছে ওয়ালটন। কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক এই তিনটি ব্র্যান্ডের কম্প্রেসার ম্যানুফ্যাকচারিং লাইন দেশে এনে পণ্য উৎপাদন করবে। আলোচিত ইউনিটে বছরে ৩২ লাখ ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার কম্প্রেসার উৎপাদন-সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ব্র্যান্ড তিনটি বিশ্বের ৫৭টি দেশে অনুমোদিত ট্রেডমার্ক ও ব্র্যান্ড নামের পাশাপাশি কোম্পানির বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের (প্যাটেন্ট, ডিজাইন ও সফটওয়্যার) মালিকানা পাবে ওয়ালটন। নতুন ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা যোগ হলে ওয়ালটনের কম্প্রেসার উৎপাদনের সক্ষমতা বেড়ে ৪৮ লাখে উন্নীত হবে। এর ফলে কোম্পানিটি ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে মার্কেট শেয়ার বাড়াতে সক্ষম হবে। জানা গেছে, ইউরোপের তুলনায় কম খরচে আন্তর্জাতিক মানের এই তিনটি ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদন করতে পারবে ওয়ালটন, যা কোম্পানিটির ব্যবসায় সমৃদ্ধি আনবে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেলে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে একটি সহযোগী কোম্পানি বা শাখা অফিস বা সংযোগ অফিস প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

ওয়ালটন ২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হচ্ছে। ৬০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩০২ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৯ হাজার ৪২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। কোম্পানির ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৯৯ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার।

এদিকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে পাঁচ টাকা ৪৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল আট টাকা পাঁচ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ইপিএস কমেছে দুই টাকা ৬০ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিক বা ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) ইপিএস হয়েছে ১৪ টাকা ৭৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২১ টাকা ৪৮ পয়সা। এছাড়া ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩০৯ টাকা ২৪ পয়সা (পুনর্মূল্যায়নসহ)। আর প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৭৮ পয়সা (ঘাটতি); অথচ আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৭ টাকা ৯৫ পয়সা।

কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫০ শতাংশ নগদ এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের জন্য ১৭০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫৪ টাকা ২১ পয়সা, আর ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩১১ টাকা ৫৯ পয়সা (সম্পদ পুনর্মূল্যায়নসহ), ২০৮ টাকা ১৬ পয়সা (সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত), আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৩১ টাকা ৯৬ পয়সা।