প্রতিনিধি, খুলনা: খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবনঘেঁষা দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে নদীশাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ৭ দফা দাবি তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভাঙনকবলিত এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোলখালী গ্রামের টি এম আমিরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম নূর।
প্রতি বছর বেড়িবাঁধ ভাঙনের ফলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
দাবিগুলো হলোÑঅবিলম্বে কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের তিন পার্শ্বের শাখবাড়িয়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া নদী এবং কপোতাক্ষ নদে নদীশাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা, উপকূলের ক্ষতিগ্রস্ত সব বেড়িবাঁধ সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নদীশাসন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে, ক্ষতিগ্রস্তদের জলবায়ু ও পুনর্বাসন তহবিলে সরকারি বিশেষ বরাদ্দে গৃহনির্মাণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, সাতক্ষীরা পওর ১৩, ১৪/১ ও ১৪/২নং পোল্ডার খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি রাস্তা-ঘাট সংস্কার ও পাকাকরণ, স্কুল-মাদ্রাসা ও ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মীয় উপাসনালয় মেরামত করা, প্রতিটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে বরাদ্দ অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং প্রকল্পের সার্বিক বিবরণী টাঙানো বাধ্যতামূলক করা এবং বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঠিকাদার ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা এবং অসাধুপায় অবলম্বনের অভিযোগ উঠলে বিচার বিভাগীয় তদন্তসাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আড়পাঙ্গাশিয়া ও শাকবাড়িয়া নদী এবং কপোতাক্ষ নদে বেষ্টিত প্রায় বদ্বীপ ভূখণ্ড দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নটি। পাকা রাস্তাবিহীন (সমগ্র এলাকায় একটি পিচের রাস্তা নেই) অবহেলিত এ ভূখণ্ডে বসবাসরত প্রায় অর্ধলাখ মানুষ নোনাপানিতে নিমজ্জিত।
সর্বশেষ গত ১৪ আগস্ট চরামুখায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে; এখনও চলছে জোয়ারভাটা। মাসখানেক আগেও একই স্থানে বেড়িবাঁধটির তিনশ’ মিটার দৈর্ঘ্যে ভেঙেছিল, যা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মেরামত করেছেন স্থানীয়রা।
বেড়িবাঁধটি ভাঙনের পর প্রায় এক মাস সময় পেলেও বিপুল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় বেড়িবাঁধ সংস্কার বা মেরামতে এগিয়ে আসেনি সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তাই অবিলম্বে নদীশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মামুনুর রশীদ সোহেল, মো. কবিরুল ইসলাম, মো. আসমাউল
হোসাইন সোহাগ, মো. জামাল হোসেন, মো. মাকসুদ আলম, মো. ইমরান খান, মো. আমীর হামজা, আলমগীর হোসেন মুন্না, আসাদুল ইসলাম ও সোহেল হোসেন প্রমুখ।