কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করছে যুক্তরাজ্য

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের গতি মন্থর করার চেষ্টায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম একটি মাইলফলকে পৌঁছাচ্ছে যুক্তরাজ্য, দেশটির সবশেষ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ২০০ বছর আগে যে দেশে শিল্প বিপ্লব হয়েছিল, এর মধ্য দিয়ে সেখানে কয়লা যুগের অবসান ঘটতে চলেছে। খবর: ওয়াশিংটন পোস্ট।র‌্যাটক্লিফ-অন-সোয়ার পাওয়ার স্টেশনের ১২তলা উচ্চতার বয়লারগুলোয় শিগগির নামবে শীতলতা।

বাষ্প তৈরির জন্য কয়লার আগুনের যে গোলা এতদিন জ্বলেছে, সেখানে নামবে অন্ধকার। ৫০০ মেগাওয়াটের চারটি টারবাইন এতদিন ঘুরেছে বিরামহীন, সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। আর ৫৭ বছর ধরে কয়লার যে পাহাড়সম স্তূপ এই বিদ্যুৎকেন্দ্রকে চালিয়ে রেখেছে, তার অবশিষ্টাংশ ধীরে ধীরে মিশে যাবে ধুলোর স্তরে। সিনিয়র ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ক্রিশ বেনেটের (৬৪) জীবনই কেটেছে র‌্যাটক্লিফ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। তিনি বলেন, সত্যি বলতে কী, কেন্দ্র বন্ধ হওয়া দেখতে আমার খারাপই লাগবে। এটা শিল্প বিপ্লব ঘটিয়েছিল, এখনও সবকিছুই কয়লার ওপর নির্ভর করছে। তবে পরিবেশের ভালো হবে, সেজন্য আমি খুবই আনন্দিত।

আগামী দুই বছরের মধ্যে কেন্দ্রটি ‘ডিকমিশনড’ করা হবে। তারপর ভেঙে ফেলা হবে। অবশিষ্ট ব্রাউনফিল্ডটি অন্য কিছুতে রূপান্তরিত হবে; হয়ত সেখানে ‘শূন্যকার্বন প্রযুক্তি’ এবং ‘শক্তি কেন্দ্র’ হবে। বিষয়টি নিয়ে এখনও পরিকল্পনা চলছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিক জার্মানভিত্তিক বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি ইউনিপার। যুক্তরাজ্যে এখন তারা প্রাকৃতিক গ্যাস চালিত পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করবে।

ব্রিটেন যে কয়লা থেকে সরে আসবে, তা আগের প্রজন্ম, সরকার ও শিল্পপতিদের কাছেও ছিল অকল্পনীয়, যারা কয়লাভিত্তিক উদ্যোগে প্রচুর মূলধন ও শ্রম দিয়েছিলেন। এক সময় যুক্তরাজ্য ছিল কয়লার দেশ, প্রায় ১০ লাখ শ্রমিককে কয়লা খননের কাজে লাগানো হয়েছিল, যাতে সস্তায় জ্বালানি তৈরি, তাপ উৎপাদন করা যায়। তারপর বাষ্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। কয়লা যেমন ঘর গরম করে, তেমনই ট্রেন চালানো এবং ইস্পাত ও সিমেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

বিশ্বের প্রথম কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয় ১৮৮২ সালে, ইংল্যান্ডে। ‘ধোঁয়াশা’ শব্দটিও সেখানে তৈরি হয়েছিল। ধনী দেশগুলোর বৈশ্বিক ক্লাবের মধ্যে ব্রিটেনই প্রথম কয়লা থেকে সরে আসছে। তার বদলে দেশটি প্রাকৃতিক গ্যাস, পারমাণবিক শক্তি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসের ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০