নিজস্ব প্রতিবেদক: করজাল সম্প্রসারণে প্রয়োজন স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজস্ব কাঠামো। পাশাপাশি কর প্রদানকারীদের হয়রানিমূলক সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ। ডিসিসিআইতে অনুষ্ঠিত ‘শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং আয়কর ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক ওয়ার্কশপে এ দাবি জানান তিনি।
গতকাল রোববার সংগঠনটির এক বিবৃতিতে ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে কমপ্লায়েন্সর উন্নয়নে দেশের কর ব্যবস্থাকে পূর্ণাঙ্গরূপে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন, যার মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালন ব্যয় হ্রাসে পাবে, পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনাকেও এটি সহজ করবে। বিশেষ করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মানসম্পন্ন হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে কর নিরূপণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় কমপ্লায়েন্স মেনে চলা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরস্কৃত করা উচিত।
রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অটোমেশনের মাধ্যমে বিদ্যমান বৈষম্য ও ঘাটতি নিরসন করা সম্ভব। একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজস্ব কাঠামো করজাল সম্প্রসারণে সহায়তা করবে, পাশাপাশি করপ্রদানকারীদের হয়রানিমূলক সেবা নিশ্চিত করবে। বিদ্যমান ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক আইনে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এগুলো ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বানও জানাই।
ওয়ার্কশপে আয়কর ব্যবস্থাপনা, ভ্যাট ও শুল্কের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে ডিসিসিআইয়ের কাস্টম, ভ্যাট অ্যান্ড ট্যাক্সেশন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির উপদেষ্টা স্নেহাশীষ বড়ুয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কমিশনার (কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা-দক্ষিণ) মো. জাকির হোসেন এবং দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সহসভাপতি এমবিএম লুৎফুল হাদি।
ভ্যাট বিষয়ক মূল প্রবন্ধে কমিশনার মো. জাকির হোসেন বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি, তবে এনবিআরের ওয়ার্কিং প্রসিডিরের ক্ষেত্রে দুটো পরিবর্তন আনা করা হয়েছে। সার্বিকভাবে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ সব শ্রেণির করদাতার ওপর কিছুটা হলেও চাপ বাড়বে। বিদ্যমান ভ্যাট আইনের রেয়াত প্রাপ্তির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট আইনটি আরও ভালোভাবে জানার ও প্রয়োগের ওপর জোর দিতে হবে।
আয়কর বিষয়ক মূল প্রবন্ধে স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, চলতি অর্থবছরের এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। দেশের শিল্পায়নের পাশাপাশি অর্থনীতিকে বেগবান করতে আমদানি শল্ক কমাতে হবে, যার প্রভাব পড়বে আয়কর ও ভ্যাটের ওপর। দেশের অর্থনীতির বিদ্যমান সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় তিনি একটি সহনশীল রাজস্ব ব্যবস্থার নিশ্চিতকরণের ওপর জোরারোপ করেন।
শুল্কবিষয়ক মূল প্রবন্ধে এমবিএম লুৎফুল হাদি বলেন, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে নতুন শুল্ক আইন প্রবর্তন করা হয়েছে এবং আইনটি যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।