নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটাল ইনভয়েস হলে আর কিছু লাগে না। ডিজিটাল ইনভয়েস না হয় বাদ দিলাম, ইনভেয়েসের চর্চা কি আমাদের আছে? কেনাকাটা করতে গেলে আমরা ইনভয়েস নিই না। দোকানদার যদি দেয়, তাও ফেলে দিই। এ চর্চা সমাজের সব পর্যায়ে আনতে হবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের নতুন ভ্যাট আইনটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল অপারেশন, ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট ও ডিজিটাল সিস্টেমভিত্তিক। এ আইনের সঠিক ব্যবহার করতে গেলে ওই জায়গায় যেতে হবে। কিন্তু আমরা তো আইনটা করেছি মাত্র, তাই নানা ধরনের অসুবিধা দেখা দেয়। এটা ধীরে ধীরে কারেকশন হবে।
সভায় ফিকি সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, করপোরেট করহার কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করার পরও নানা শর্তের কারণে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই উৎসে কর কর্তনের বিপরীতে ন্যূনতম করহার যৌক্তিক করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ফিকি সভাপতি বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, একটি প্রতিষ্ঠান বছরে ৩৬ লাখ টাকার বেশি নগদ লেনদেন করলে ২ দশমিক ৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর দিতে হয়। এ হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেয় ফিকি।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এক ধাক্কায় ক্যাশলেস সমাজ গড়তে চাইলে তা সম্ভব হবে না। এজন্য ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। এছাড়া বর্তমানে ইফেকটিভ ট্যাক্স রেটের হার ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে ব্যবসা সহজ করতে তা যৌক্তিক করা সম্ভব।
এছাড়া গত কয়েক বছরে এনবিআর কিছু পণ্যের এইচএস কোড পরিবর্তন করেছে, যা ওয়ার্ল্ড কাস্টম অরগানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) এইচএস কোড গাইড লাইনের পরিপন্থি উল্লেখ করে তাতে আমদানিকারকের খরচ অনেক বাড়ছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে তা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এ কথা জানিয়েছিল। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সকালের প্রাক-বাজেট আলোচনায় বলেন, বিগত অর্থবছরে কিছু শর্তসাপেক্ষে প্রায় সব ক্ষেত্রে করপোরেট করহার ২ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় হ্রাসকৃত কোম্পানি করহারের সুবিধা কেউই ভোগ করতে পারছে না। অর্থ আইন, ২০২২ অনুযায়ী, নগদ লেনদেনের শর্তাবলির কারণে হ্রাসকৃত করহার সুবিধা নেয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে শুল্ক বিভাগের সদস্য মো. মাসুদ সাদেক, ভ্যাট নীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা ও আয়কর নীতির সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।