করসেবা সহজ করতে অটোমেশনে মনোযোগ দিন

 

করসেবা সহজ ও অটোমেশন করতে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে করদাতার ভোগান্তি কমবে, সময় বাঁচবে। নিশ্চিত হবে স্বচ্ছতা। বর্তমানে অনলাইন যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। এতে দ্রুত মেসেজ, ছবি ও ভয়েস মেসেজ পাঠানো যায়। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে করসেবা দেয়ায় রংপুর ও ঢাকার কর অঞ্চল-৫-কে পুরস্কৃত করছে এনবিআর।

করসেবা স্বয়ংক্রিয়করণ সময়ের দাবি। এতে করদাতার ভোগান্তি কমবে, সময় বাঁচবে। নিশ্চিত হবে স্বচ্ছতা। আমরা মনে করি, যত দ্রুত সম্ভব সব কর অঞ্চলে অটোমেশন চালু করা উচিত। অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সব অফিসকে অনলাইনে নিয়ে আসা করদাতা ঘরে বসে নিজের কর তথ্য যাচাই করতে পারেন। এতে প্রতিটি ধাপে কম সময় লাগবে। ফলে রাজস্ব সুরক্ষা ও আদায় বাড়বে। বিভিন্ন সেবা সংস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কর অফিস-সংশ্লিষ্ট অফিসের তথ্য ও ডেটা ব্যবহার করে নতুন করদাতা শনাক্ত করতে পারবেন। কোনো নতুন করদাতা আড়ালে থাকার সুযোগ নেই।

তার বাড়ি থাকলে গৃহকর দিতে হয়। নিজ নামে পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলে বিল দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট অফিসের সার্ভারে প্রবেশগম্যতার সুযোগ থাকায় এনবিআর কর্মীরা করদাতার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ব্যতিরেকেই সব তথ্য জেনে নিতে পারেন। এমন যোগাযোগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সারাদেশে এই উদ্যোগ প্রয়োগের মাধ্যমে বিপুল নতুন করদাতা শনাক্ত ও করজাল সম্প্রসারণ সম্ভব হবে।

প্রচলিত আছে—অনেক অফিসের চেয়ার-টেবিলও ঘুষ খায়। চেয়ার-টেবিলে ঘুষ খেলে সেবাপ্রত্যাশী যেমন যথাযথ সেবা পান না, তেমনই রাষ্ট্রও উপযুক্ত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। সরকারি দপ্তরগুলোয় স্বচ্ছতা আনতে তাই অটোমেশনের বিকল্প নেই।

করদাতার সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে রাজস্ব আহরণের বিষয়ে একটি সাধারণ ধারণা সমাজে প্রচলিত আছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে কিছু অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এ বিভাগের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। করদাতা তাদের আবদারে রাজি না হলে অকারণে নিরীক্ষাসহ বিভিন্ন বাহানা দেখিয়ে করদাতাকে হয়রানি করার কথা শোনা যায়। এ ব্যবস্থার আশু পরিবর্তন জরুরি। পরিবর্তনের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন অটোমেশন।

রাজস্বকে বলা হয় জাতীয় উন্নয়নের অক্সিজেন। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব সংগ্রহে এনবিআর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু আদায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় লক্ষ্য অর্জিত হয় না। অটোমেশনে উপরি-আয় কমে যাওয়ার ‘শঙ্কা’য় এর নীরব বিরোধিতাও করেছেন কেউ—এমন মতও প্রচলিত আছে সমাজে।

অংশীজনসহ সাধারণ মানুষের ধারণা, রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অটোমেশন বড় ভূমিকা রাখবে। অটোমেশন পদ্ধতি চালু হলে এক ক্লিকে জানা সংশ্লিষ্ট অনেক তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাবে। সেবাগ্রহীতাকে টেবিলে টেবিলে ধরনা দিতে হবে না। কম সময়ে বেশি লোককে সেবা দেয়া যাবে। কোনো বাড়তি খরচ হবে না।

অটোমেশন হলেও মানুষই যন্ত্র পরিচালনা করবে। সেক্ষেত্রে অন্য কোথাও থেকে যাতে অটোমেশনের সার্ভার নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে সমস্যা থেকেই যাবে। পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে অটোমেশন করা গেলে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০