বন্ড মার্কেট সম্প্রসারিত করতে হবে। বন্ড মার্কেটের সঙ্গে এনবিআরের একটি সম্পর্ক রয়েছে। করহার কমালে পুঁজিবাজারে বন্ড মার্কেটটি শক্তিশালী হতো। কিন্তু এক্ষেত্রে এনবিআরের এক ধরনের উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। আর এসব নানা কারণেই বাজার দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের
সিনিয়র নিউজ কনসালট্যান্ট রায়হান এম চৌধুরী এবং ইআরএফের সাবেক সভাপতি সুলতান মাহমুদ।
সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন, গত ৯ থেকে ১০ বছরে পুঁজিবাজারে নীতিগত অনেক বিষয় সংশোধন করা হয়েছে। আসলে অনেক বিষয় সংশোধন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়েছে কতটুকু। তেমন কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি, যারা বিভিন্ন সময়ে শেয়ার কেনাবেচায় কারসাজি করেছে তাদের কোনো শাস্তি দিতে দেখা যায়নি। গত এক থেকে দুবছরে যেসব কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সত্যিকার অর্থে সেগুলো বাজারে আসার মতো নয়। আবার বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য তেমন কোনো কোম্পানি আনতে পারেনি। মার্চেন্ট ব্যাংকসহ ডিএসই, সিএসইসি এবং বিএসইসি এ দায় এড়াতে পারে না।
রায়হান এম চৌধুরী বলেন, আর্থিক খাতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বিরাজ করছে। এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে তো আছেই। নতুন করে আবার প্রভাব পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। গতকাল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, গত ১৫ দিনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় এক হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন এবং ৮০০ কোটি টাকা শেয়ার কিনেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এটির কারণেও বাজার চাপে রয়েছে। বাজারে বন্ড মার্কেট সম্প্রসারিত করতে হবে। বন্ড মার্কেটের সঙ্গে এনবিআরের একটি সম্পর্ক রয়েছে। করহার কমালে বাজারে বন্ড মার্কেটটি শক্তিশালী হতো। এখানে এনবিআরের এক ধরনের উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। এসব কারণেই বাজার দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রায় ৬৮টি সরকারি স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাগুলোর প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এমনিতেই মানি মার্কেটে অস্থিরতা বিরাজ করছে, যখন এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নেওয়া হবে, তখন তারল্য সংকট আরও তীব্র হয়ে উঠবে। মানি মার্কেটে তারল্য সংকটের পাশাপাশি এর নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়বে। ব্যাংক, আর্থিক এবং বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সমস্যা রয়েছে, তার সমাধান সহজে হবে না। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ বাদ দিয়ে দেশের সামগ্রিক স্বার্থ বিবেচনা করে অপরাধীদের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আর্থিক খাত ও পুঁজিবাজার ভালো করা সম্ভব।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ