ক্রীড়া ডেস্ক: চেলসি-ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচের আগেই লিভারপুল সমর্থকদের মধ্যে টের পাওয়া গিয়েছিল উৎসবের টেউ। চেলসির ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক বৃহস্পতিবার অল রেডদের সেই অপেক্ষা ঘোচান ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই। এমন অবস্থায় কোন সমর্থকের ঘরে বসে থাকতে মন চাইবে! লিভারপুল সমর্থকেরাও নেমে পড়েছিলেন রাস্তায়। অ্যানফিল্ডে জমা হয় প্রচুর মানুষ। সবার উদ্দেশ্য একটাই, গত তিন দশকের অপেক্ষা, যন্ত্রণা, দুঃখ, কষ্ট, বেদনা উৎসবের আবিরে মুছে ফেলা।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে বৃহস্পতিবার চেলসি জিতে ২-১ গোলে। এরই সঙ্গে ৭ ম্যাচ হাতে রেখে প্রথমবার প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছে লিভারপুল। ইংলিশ প্রথম বিভাগ ফুটবলের সর্বোচ্চ ট্রফি তাদের দখলে থাকলেও প্রতিযোগিতাটি নাম পাল্টে প্রিমিয়ার লিগ হওয়ার পর শিরোপার ঘর ছিল ফাঁকা। ইয়ুর্গেন ক্লপের হাত ধরে ট্রফি খরা কাটালো লিভারপুল।
চেলসি জেতায় ৩০ বছরের অপেক্ষা ফুরিয়েছে লিভারপুলের। প্রথমবারের মতো জিতেছে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। করোনাকালেও কি সেই উৎসব থেমে থাকে! হাজারও লিভারপুল ভক্ত রাস্তায় নেমে স্মরণীয় মুহূর্তটা রাঙিয়েছে আগুন জ্বালিয়ে ও আতশবাজির আলোতে।
বৃহস্পতিবার লিভারপুলের শিরোপা জয়ের উৎসবে রাস্তায় নেমে আসেন ভক্তরা। অ্যানফিল্ডের রাস্তা-ঘাট থেকে পানশালায় মানুষে ভীড় তো ছিলই। তবে মূল উৎসবটা শুরু হয়েছে লিভারপুলের সূতিকাগার অ্যানফিল্ড থেকে। বাজি-পটকা ফুটিয়ে, আনন্দের আতিশায্যে একে-অপরকে জড়িয়ে ধরে হৃদয়ের দাবি মেটান ‘অল রেড’ সমর্থকেরা। এই তা তা থৈ থৈ আনন্দ-উৎসবে স্রেফ বিলীন হয়ে যায় ক্লপের অনুরোধ।
ইংল্যান্ডে এখনও করোনা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। তারপরও লিভারপুলেল সমর্থকরা ঘরে বসে থাকেনি। প্রিয় ক্লাবের দীর্ঘদিন পর প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের উৎসবে সামিল হতে নেমে আসে রাস্তায়। মার্সেসাইড পুলিশও তাদের আনন্দ মাটি করেনি। যদিও স্থানীয় সময় রাত ১১টায় অ্যানফিল্ডে ঢোকার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান কনস্টেবল রব কার্ডেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, ‘স্টেডিয়ামের বাইরে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিল।’ তবে তাদের সবাই ‘ভালো প্রকৃতির’ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে এই পুলিশ কর্তা লিভারপুল ভক্তদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। কারণ করোনাকালে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশিরভাগ লিভারপুল ভক্ত রাস্তার বের হয়নি।
৩০ বছর পর প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতার আনন্দে মেতেছিল লিভারপুলের খেলোয়াড়রাও। একসঙ্গে উৎসব করেছেন গোলকিপার আলিসন, ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক ও মিডফিল্ডার অ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলিন। এদিকে অ্যানফিল্ডের পথ ধরে আনন্দে মাতা লিভারপুল ভক্তরা আগুন জ্বালিয়ে, ক্লাবের পতাকা উড়িয়ে গলায় সুর তুলেছিলেন খেলোয়াড়দের নাম ধরে, যার মধ্যে রয়েছেন ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ ও অধিনায়ক জর্ডান হেনডার্সন। অনেক ভক্ত আবার কোচ ক্লপের ছবিযুক্ত প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসেছিলেন।
দীর্ঘ সময় পর প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ঘরে তোলায় লিভারপুলের আনন্দটাও তাই বাঁধভাঙা। যে কারণে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বালাই ছিল না সমর্থকদের মধ্যে।