এখন পর্যন্ত করোনাকালের মহৌষধ ‘কোয়ারেন্টাইন’। হয়তো কিছুদিনের জন্য পৃথক থাকতে হবে; ওষুধ আবিষ্কার হওয়ার পর আবার আগের মতো স্বাভাবিক হবে সবকিছু। তবে মানসিক সমস্যা প্রকট হয়ে থাকছে ততদিন। মনের প্রভাব পড়ছে দেহে। এতে কিন্তু হেরে গেলে চলবে না, এলোমেলো এ সময়ে নিজেকে জয় করতে হবে। বাঁচতে হবে শতবছর। কিন্তু কীভাবে? এজন্য দরকার সুষম খাবার, ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম। পাশাপাশি আরও কয়েকটি সহজ বিষয় দেখে নিতে পারেন।
প্রচুর পানি পান করুন: খেলাধুলা না করে থাকলে দিন ও রাত মিলিয়ে অন্তত দুই লিটার পানি পান করুন। খেলাধুলা করলে এর সঙ্গে আরও এক লিটার যোগ করুন।

সবুজ খাবার খান: পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফল খেতে হবে। সব ধরনের মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ পাতে রাখতে চেষ্টা করুন। সপ্তাহে একদিন মাংস খান।
কার্ডিও করতে হবে: কার্ডিও ভাসকুলার অ্যাকটিভির সংক্ষিপ্ত রূপ ‘কার্ডিও’। এ ধরনের শরীরচর্চা হৃৎকম্পন বাড়িয়ে দেহের রক্ত চলাচল বাড়ায় এবং বিপাক বৃদ্ধি করে। হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো প্রভৃতি চালিয়ে যেতে হবে। শরীর ও মন ঝরঝরে রাখতে নিয়মিত কার্ডিও করুন। বুক ভরে তাজা বাতাস নিন। হাঁটুন। জগিং করুন; অথবা সাঁতার কাটুন নিয়মিত। ঘাম ঝরান।
ধূমপান ও মাদকদ্রব্যকে ‘না’ বলুন: এসব পণ্যের কোনো উপকারিতা নেই। এদের ত্যাগ করুন। এগুলো যেমন শরীরের ক্ষতিকর, তেমনি পরিবেশের জন্যও মারাত্মক ক্ষতি।
সাহচর্য: প্রিয় মানুষের সঙ্গ নিন। স্ত্রী বা স্বামীর ঘনিষ্ঠ সঙ্গ উপভোগ করুন। বিশ্বস্ত থাকুন একে অপরের প্রতি। মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন মানুষ এড়িয়ে চলুন।

দেহের কথা শুনুন: হোক সেটা খাবার কিংবা পানি, ঘুম অথবা ব্যথা, দেহ কি চায়Ñ তা শুনুন। তার ডাকে সাড়া দিন। আপনার দেহ অন্যের চেয়ে আলাদা; এর অর্থ আপনাকেই নিজ দেহের ভারসাম্য রক্ষার উপায় খুঁজে নিতে হবে।
মনের ব্যায়াম করুন: বয়স বাড়ার সঙ্গে মনের বয়সও বাড়ে। তাই প্রতিদিন মনের ব্যায়াম করুন। মনকে কীভাবে সতেজ রাখা যায়, তার উপায় বের করুন। ইউটিউবে এ-সংক্রান্ত অনেক ব্যায়াম পাবেন। চর্চা করুন।
প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমান: একেকজনের ঘুমের চাহিদা একেকরকম। কারও সঙ্গে এর মিল নেই। নিজেরটা বুঝুন। সে অনুযায়ী ঘুমান।
চাপযুক্ত কাজ এড়িয়ে চলুন: মানসিক ও দৈহিক স্বাস্থ্যে স্ট্রেসের নেতিবাচক প্রভাব পরীক্ষিত। তাই এ ধরনের কাজ এড়িয়ে চলুন।
তাড়াহুড়ো নয় কখনো: তাড়াহুড়োয় ভুলের পরিধি বাড়ে। হয়তো এর ক্ষতি তাৎক্ষণিক দেখা যায় না, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতের মতো। কাজেই দেরি হলেও ধীরে গাড়ি চালান, দেখে-শুনে রাস্তা পার হোন। জীবনের সব ক্ষেত্রে এ অভ্যাসের চর্চা করুন।
থাকুন হাসিখুশি: হাসি-আনন্দ মনের আয়ু বাড়ায়। জীবনকে পরিপূর্ণ করে। এর মানে, শতবছর বাঁচতে চাইলে হাসিখুশি থাকতে হবে।
বছরে একবার চেকআপ করান: কোনো রোগবালাই না থাকলেও বছরে একবার ‘হেলথ চেকআপ’ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। পারিবারিক ইতিহাস, জিন, দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে কি না, তা জানুন।
রিডার্স ডাইজেস্ট অবলম্বনে রতন কুমার দাস