করোনাকালে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

করোনা ভাইরাসজনিত রোগের (কভিড) প্রাদুর্ভাবে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘরে থাকলেই নিরাপদে থাকা যাবে, এটি প্রায় সবাই বোঝে। কিন্তু ঘরবন্দি শিশুরা তা বুঝতে চাইবে না। এ অবস্থায় শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।

শিশুরা মানসিক চাপে নানারকম প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। যেমন মায়ের গায়ের সঙ্গে বেশি লেপ্টে থাকা, চুপ থাকা, অকারণে রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হওয়া, বিছানা ভিজিয়ে দেওয়া প্রভৃতি।

শিশুসন্তানের এমন  প্রতিক্রিয়ায় সহানুভূতির সঙ্গে সাড়া দিতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে, তাদের প্রতি মনোযোগ দিন। কঠিন সময়ে শিশুদের প্রয়োজন বড়দের ভালোবাসা এবং মনোযোগ। তাই শিশুদের কথা শুনুন, তাদের সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলুন এবং তাদের আশ্বস্ত করুন। সম্ভব হলে শিশুদের খেলার, ছবি আঁকার এবং আরাম করার সুযোগ করে দিন।

শিশুদের তাদের মা-বাবা এবং পরিবারের কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করুন এবং যতটা সম্ভব শিশুকে তার দেখাশোনা করার লোকের থেকে আলাদা করবেন না। যদি কোনো কারণে আলাদা হলে (যেমন হাসপাতালে ভর্তি) রোজ তাদের যোগাযোগ (যেমন ফোনের মাধ্যমে) করিয়ে দিন এবং সবসময় আশ্বাস দিন।

যতটা সম্ভব রোজকার রুটিনমাফিক কাজ করে যান অথবা স্কুল/লেখাপড়া, খেলাধুলা এবং আরাম করাসহ নতুন পরিবেশে নতুন রুটিন তৈরি করুন। যা ঘটছে সে সম্পর্কে শিশুদের জানান, এখন কী চলছে, তা বুঝিয়ে বলুন এবং কিভাবে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাবেন সেটা তাদের বয়স অনুযায়ী এবং তারা বুঝতে পারে এমন শব্দ ব্যবহার করে বুঝিয়ে বলুন।

শিশুদের বয়সের উপর নির্ভর করে তাদের উপযোগী তথ্য দিন। কী হতে পারে তা সহজ ভাষায় বুঝিয়ে তাদের আশ্বস্ত করুন (যেমন পরিবারের কোনো সদস্য এবং / অথবা শিশু নিজে অসুস্থ বোধ করতে পারে এবং কিছু সময়ের জন্য তাকে/ তাদের হাসপাতালে যেতে হতে পারে যাতে ডাক্তাররা তাদের সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করতে পারে)। সরাসরি হেল্প লাইনের নম্বরগুলো তাদের কাছে দিয়ে রাখতে পারেন, যেন জরুরি প্রয়োজনে তারা ব্যবহার করতে পারে।

শিশুসন্তানের সঙ্গে আপনিও ঘুমান। এতে আপনি শক্তি ফিরে পাবেন। শিশুর পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যান।  সে যেন আপনাকে দেখতে ও শুনতে পায়, সেটি নিশ্চিত করুন। খুব অল্প বয়স থেকেই একসঙ্গে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।  ছবিতে কী ঘটছে, শিশুকে তা বোঝানোর চেষ্টা করুন। শিশুকে তার সব ইন্দ্রিয় দিয়ে বইটি জানার সুযোগ করে দিন। 

শিশুর সঙ্গে তার অঙ্গভঙ্গি নকল করে খেলায় মেতে উঠুন। তাদের উচ্চারিত শব্দ উচ্চারণ করুন। শিশুর সঙ্গে নম্র আচরণ করতে হবে। নিজের সঙ্গেও নম্র থাকতে হবে। কিছু একটা ঠিকভাবে হয়নি বলে মেজাজ হারিয়ে ফেলতে হবে, তা কিন্তু নয়। বাবা-মা শিশুর প্রথম অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাই এমন কাজ করা যাবে না, যা শিশুকে আপনি শেখাতে চান না।  

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০