করোনাকালে সচল থাকা কোম্পানি নিয়ে আশাবাদ বিনিয়োগকারীদের

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: বিশ্বজুড়ে চলছে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের তান্ডব। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ২০০টির বেশি দেশে আঘাত হেনেছে এ মরণঘাতি ভাইরাস। অন্যান্য দেশের মতো ভাইরাসটির কবলে পড়েছে বাংলাদেশেও। এতে এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে লকডউন। বন্ধ রয়েছে প্রায় সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

এরই ধারাবাহিকতায় বন্ধ রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো। তবে এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন, সিমেন্ট এবং স্টিল উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। করোনাভাইরাসের মধ্যেও উৎপান সচল রয়েছে এসব খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির। পাশাপাশি টেলিকম খাতের কোম্পানিগুলোর সেবাও সচল রয়েছে।

যে কারণে করোনা পরবর্তী সময়ে এসব কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি থাকবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি সংখ্যা রয়েছে ৩২টি।

এছাড়া সিমেন্ট খাতের কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে ৭টি। অন্যদিকে স্টিল খাতের কোম্পানী ৩টি ও টেলিকম খাতের কোম্পানি রয়েছে ২টি। অর্থাৎ বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ চার খাতের কোম্পানির সংখ্যা ৪৪টি।

জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, করোনা পরবর্তীতে সময়ে বিনিয়োগকারীরা আরও সর্তক হবেন। এই ক্ষেত্রে তারা যে সকল কোম্পানির উৎপাদন ভালো রয়েছে সেইসব কোম্পানির দিকে নজর দিবে। সে ক্ষেত্রে তারা বিনিয়োগের জন্য হয়তো এসব কোম্পানিকে প্রাধান্য দিবেন।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বিনিয়োগকারীরা বলেন, পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি মন্দার কারণে এমনিতেই তারা লোকসানে রয়েছেন। তার ওপর এক মাসের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এতে তাদের আয়ও বন্ধ রয়েছে। সেজন্য তাদের চোখ থাকবে যে সকল কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ প্রদান করবে সেই সকল কোম্পানির দিকে।

এই ক্ষেত্রে করোনার সময় যেসব কোম্পানির উৎপাদন সচল রয়েছে এসব কোম্পানি এগিয়ে থাকবে। এ প্রসঙ্গে লুৎফর রহমান নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো নয়। তার ওপর করোনাকালে লেনদেনও বন্ধ রয়েছে। এতে লোকসানের পাশাপাশি আমাদের আয়ও কমে গেছে।

তাই করোনা পরবর্তী সময়ে অনেক হিসাব করে লেনদেন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে যে সকল কোম্পানির আয়-মুনাফা ভালো হবে সেইসব কোম্পানির দিকে নজর থাকবে আমাদের।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, করোনার সময়ে অধিকাংশ কোম্পানির উৎপান বন্ধ রয়েছে। এতে তাদের আয় ও মুনাফায় প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

সেই ক্ষেত্রে যে সকল কোম্পানির উৎপাদনে রয়েছে সেইসব কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা বাড়বে। উল্লেখ্য, যে সকল কোম্পানি উৎপাদনে রয়েছে এর বেশিরভাগেরই লভ্যাংশ দেওয়ার ইতিহাস ভালো। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩২ কোম্পানির মধ্যে ২৮টি প্রতিষ্ঠানই ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ প্রদান করে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে।

এই খাতের অন্য চার কোম্পানির মধ্যে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে রয়েছে একটিভ ফাইন ও সেন্ট্রাল ফার্মা। এর মধ্যে সেন্ট্রাল ফার্মার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আর দুটি কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠনগুলো হচ্ছে বেক্সিমকো সিনথেটিক ও কেয়া কসমেটিকস। এছাড়া স্টিল, সিমেন্ট ও টেলিকম খাতের কোম্পানিরগুলো ১০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০