Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:14 pm

করোনাভাইরাস দীর্ঘমেয়াদি হবে না

বিশ্বের ১৯৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। ফলে পুরো বিশ্বই এখন এটা নিয়ে চিন্তিত। করোনাভাইরাসের আক্রমণের শিকার বাংলাদেশেও। এর প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদি হবে না বলে আশা করেন অনেকেই। গতকাল এমন মন্তব্য করেন এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানের আলোচকরা।

আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংক ক্যাপিটালের এমডি ও সিইও এরশাদ হোসেন এবং জনতা ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. জামালউদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে এরশাদ হোসেন বলেন, করোনায় পুঁজিবাজারে একটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে। তবে আশা করি এ ভাইরাসটি দীর্ঘমেয়াদি হবে না। যদি না হয়, সেক্ষেত্রে সামনের দিনগুলো বাজার ভালো অবস্থানে যাবে। এতে কিছু কোম্পানির ইপিএস কমে যাবে। আবার কিছু কোম্পানি বিশেষ করে ওষুধ, টেলিকমিউনিকেশন ও প্রযুক্তি খাত খুব তাড়াতাড়ি ভালো করবে।

তিনি আরও বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে পুঁজিবাজার একটা চরম পর্যায়ে ছিল। ফলে বিনিয়োগকারীর মধ্যে একটি আতঙ্ক বিরাজ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশ্যই এ বিষয়টি বাজারের জন্য ইতিবাচক হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারী কিছুটা হলেও লোকসান কমানো গেছে। কারণ কেউ চায় না বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হোক। তবে এখন বাজারে তারল্য কমে গেছে। সেভাবে বিনিয়োগকারী বাজারে দেখা যাচ্ছে না। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। এ অবস্থায়  বাজারে কিছুদিন ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা লেনদেন হবে। এরপর বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে মনে করি। 

অনুষ্ঠানে ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাস আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে বাংলাদেশ ততটা খারাপ অবস্থায় নেই। এখন পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি যে অবস্থা বিরাজ করছে তা করোনাভাইরাসের কারণে এ অবস্থা দেখা যাচ্ছে। যদি এ ভাইরাস দীর্ঘমেয়াদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সব আয়ের খাত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ ভাইরাসে শুধু আমাদের দেশ নয় বিশ্বের সবই দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর যদি এটা স্বল্পমেয়াদি হয়, তাহলে আমাদের দেশ সহজেই এ সমস্যা অতিক্রম করতে পারবে। কথা হচ্ছে, আমাদের প্রত্যেকটি খাতে ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। সেক্ষেত্রে  কী কী প্রস্তুতি নেওয়া উচিত তা এখন থেকে নিতে হবে। আবার করোনাভাইরাসের প্রকোপে অর্থনীতি সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিগত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ ব্যাংক ও ব্যবসা বাণিজ্য সচল রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। এছাড়া পুঁজিবাজার চাঙ্গা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তালিকাভুক্ত প্রতিটি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা করে বাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। যদি এ অর্থ বাজারে বিনিয়োগ করা হয়, সেক্ষেত্রে বাজার ইতিবাচক হবে বলে মনে করি।  

তিনি আরও বলেন, করেনাভাইরাসের এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা প্রধানমন্ত্রী পক্ষে একা সম্ভব নয়। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি রয়েছে। এসব ব্যক্তিদের এখন কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি মেম্বার থেকে শুরু করে মন্ত্রিপর্যায়ের সবাইকেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এছাড়া প্রশাসনের নিম্ন থেকে উচ্চপর্যায়ের সব কর্মকর্তাকেও সতর্ক থাকতে হবে। যাতে এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ অসৎ উদ্দেশ্য কোনো পণ্য গুদামজাত করে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে না পারে। অর্থাৎ সর্বোপুরি সবাইকে এ সময় কঠোর সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ