কোভিড-১৯-এর (করোনাভাইরাস) নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। প্রযুক্তি খাতে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পাশাপাশি চলছে বিড়ম্বনা। কেননা প্রযুক্তির সহায়তায় অনেক ব্যবহারকারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনা ঘিরে গুজব ও ভুয়া খবরের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বনে যাচ্ছেন। তাই এ বিষয়ে সঠিক তথ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন মাইক্রোসফট করপোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস।
জনস্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবেও বিল গেটসের সুনাম রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে তিনি সতর্কবাণী শুনিয়ে আসছেন, মহামারি বিশ্বের প্রধানতম হুমকি। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক এ সমস্যা থেকে উত্তরণে কাজ করে তার দ্য বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ তেমনই একটি মহামারি বলে মনে করছেন বিল। তার মতে, একশ বছরে একবারই এমন মহামারির প্রকোপ দেখা দেয়।
অনেক আগে বিল বলেছিলেন, মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব প্রস্তুত নয়। তার এমন কিছু ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছে। তিনি সম্প্রতি দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে উল্লেখ করেছেন, কোভিড-১৯ অতটা মারাত্মক নয়, তবে উদাসীনতার সুযোগ নেই, জীবন বাঁচাতে হবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলা কিংবা এ থেকে পরিত্রাণ পেতে তার পাঁচ পরামর্শ:
১. আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার তৈরি করতে হবে, যেখানে সব দেশ সঠিক তথ্য শেয়ার করবে
২. ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে
৩. ধনী দেশগুলোকে আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার গরিব দেশগুলোয় স্বাস্থ্যকর্মী পাঠাতে হবে, যেন তারা ভাইরাসটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারে ও ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে সরবরাহ করতে পারে
৪. সরকার ও দাতা সংস্থা ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত তহবিলের ব্যবস্থা করবে
৫. সবাই যেন ভ্যাকসিন পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে বিল গেটস আশাবাদী, জুনের শুরুতে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব ইনফেকশাস ডিজিজেজ সেন্টারের পরিচালক অ্যান্টনি ফাউচি আশা করছেন, মধ্য এপ্রিলে ভ্যাকসিনের ব্যবহার শুরু করতে পারবে তার সেন্টার। ভ্যাকসিন তৈরির কয়েকটি ধাপ রয়েছে। এতে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাই দেশটির হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেসের সেক্রেটারি অ্যালেক্স অ্যাজার ঘোষণা দিয়েছেন, সাশ্রয়ী দামে বিতরণ করা হবে ভ্যাকসিন।
দ্য বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এরই মধ্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তাদের ধারণা, এ যুদ্ধজয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
রতন কুমার দাস