Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 6:28 pm

করোনাভাইরাস শিখিয়েছে দেশেই চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: মহামারি করোনার প্রথম পর্যায় সফলতার সঙ্গে অতিক্রম করার পরে দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। সূত্র: বিডিনিউজ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমি এখন ঘরের মধ্যে একা, তাই মাস্ক পরছি না। কিন্তু লোকজন এলেই মাস্ক পরি। লোকজনের সামনে গেলেই মাস্ক পরতে হবে।’

মহামারি মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে আগাম ভ্যাকসিন অর্ডার করেছে সরকার। করোনা-পরবর্তী সময়ে যেন খাদ্য সংকট তৈরি না হয়, এজন্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। খাদ্য সংকট যেন তৈরি না হয়, এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের একটি পরিকল্পনা ছিল। আমরা প্রত্যন্ত এলাকাতেও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এমনও সময় ছিল যখন হাঁচি দিলেও অনেকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে যেত। করোনাভাইরাস আমাদের শিখিয়েছে দেশেই চিকিৎসাসেবা নেওয়া সম্ভব। অনেক দেশের প্রবৃদ্ধি মাইনাসে চলে গেছে, কিন্তু আমরা ধরে রাখতে পেরেছি। করোনার মধ্যেও ব্যাংকগুলোকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এতে অনেকেই ছোটখাটো ব্যবসা করেও বেঁচে থাকতে পারছে।’

জনগণের অধিকার আদায়ের মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগের জš§ হয়েছে বলে জানিয়ে দলের সভাপতি বলেন, ‘একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পাওয়াটা বড় নয়, বরং কী দিতে পারলাম সেটাই বড়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এ বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে।’ তিনি তৃণমূল থেকে সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা দেন।

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। বিভিন্ন উপনির্বাচনে তারা প্রার্থী দেয়। নির্বাচনের আগে খুব হইচই করে। কিন্তু নির্বাচনের দিন দুপুরে পরাজয়ের ভয়ে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়। মূলত নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তারা এরকম করে।’

সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সমালোচনা হলে ভালো, এতে সরকারের কার্যক্রমের ভালোমন্দ আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু অপপ্রচার কেন? সমালোচনায় আমাদের আপত্তি নেই, ভালো কাজ করলে সেটা একটু স্বীকার করবেন। আপনারা যা ইচ্ছা লিখতে পারেন, এতে হয়তো পত্রিকার কাটতি বাড়বে, হয়তো এনজিওর জন্য বিদেশি ফান্ড আসবে। কিন্তু এই ফান্ড কোথায় যায়, ভবিষ্যতে এটার হিসাব নেওয়া শুরু করব।’

এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভায় সভাপতিত্ব করেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র চলছে। ফেসবুক-ইউটিউবে গুজব ও অপপ্রচার চলছে। এসবের ওপর ভিত্তি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চলছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এ পার্টি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পার্টি, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। যেকোনো অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধর্ম নিরপেক্ষতার চেতনার বাইরে যাওয়ার আমাদের সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার আদর্শের প্রশ্নে কোনো আপস নেই।’

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কার প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারা বিশ্ব করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় বিপর্যস্ত। আমাদের এখনই আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, এর কোনো ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। আমরা দলীয়ভাবে সচেতনতা কার্যক্রম চালাব। আমি আমাদের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোকে এ বিষয়ে সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছি। মহানগর-জেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত ইউনিটগুলো সচেতনতা কার্যক্রম চালাবে।’

দুই-এক দিনের মধ্যে উপকমিটি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোনো একজন একাধিক পদে থাকতে পারবেন না। মহানগরসহ সহযোগী সংগঠনগুলোতেও যদি কোনো ব্যক্তি সদস্য পদে থাকেন, তিনি সাবকমিটিতে থাকতে পারবেন না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল, মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, আইন সম্পাদক নজিবুল্লা হীরু, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সভায় উপস্থিত ছিলেন।