শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ (আইসিসি,বি) মনে করে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে প্রান্তিক ও উদীয়মান অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে, যেহেতু বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ৭০ শতাংশেরও বেশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে যায়। তাই দেশের অর্থনীতি অধিক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইসিসি বাংলাদেশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি চার দশমিক আট শতাংশ কমে ২৬ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা বিগত অর্থবছরে একই সময়কালে ২৭ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। রপ্তানির এ নি¤œমুখী ধারা সামনের মাসগুলোতে আরও বেড়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার এবং সরবরাহ চেইনের বড় দাতা, যা রপ্তানি, আমদানি এবং উৎপাদনের জোগান দেয়।
উৎপাদন, সরবরাহ চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ও বাজার বিপর্যয়ের ফলে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অর্থনৈতিক বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে। অর্থনৈতিক খাত বিশেষত বাংলাদেশের ব্যাংক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং রেমিট্যান্স আয় কমে যেতে পারে।
ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণের সময় এখনও হয়নি কেননা প্রতিদিনই নতুন পরিস্থিতির উদয় হচ্ছে, সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রাক্কলন দ্বারা শুধু ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা বোঝানো যেতে পারে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ভর করবে সংক্রমণের বিস্তার ও এর স্থায়িত্বের ওপর এবং নীতি-নির্ধারকরা স্বাস্থ্যগত এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি উপশমে কত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে তার ওপর।
আইসিসি বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, দ্রুততম সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে দেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। সুতরাং, ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতাকে মোকাবিলা করার জন্য সরকার এবং ব্যবসায়ী মহলকে সর্বোচ্চ নীতি-কাঠামোতে একমত হতে হবে। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি যে, এ ধরনের দুর্যোগ যার কোনো ভৌগলিক সীমারেখা নেই মোকাবিলায় শুধু সমন্বিত পদক্ষেপই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সুতরাং, আমরা এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য নীতি-নির্ধারকদের তাগিদ দিচ্ছি তাদের নেতৃত্বে সরকার এবং বেসরকারি খাতের নেতাদের একত্র করার জন্য। অতীতে বাংলাদেশ অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে এবং আমরা আশা করি এ দুর্যোগও সাহস এবং সহিষ্ণুতার সঙ্গে উতরাতে সক্ষম হবে। প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চলতি মাসের ১১ তারিখে করোনাভাইরাস সংক্রমণকে বিশ্ব মহামারি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এ ভাইরাসটি ইতোমধ্যেই ১৭০টি দেশ এবং অঞ্চলে ছড়িয়েছে এবং তিন লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এ সংখ্যা থেকে যদিও যথাযথভাবে এ দুর্যোগের মাত্রা এবং এর ফলে যে বিশ্ব সংকটের সৃষ্টি হবে তার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে না। মহামারি পরবর্তী যে সংকট তৈরি হবে তা বোঝার এবং অনুমান করার চেষ্টা করছে অর্থনীতিবিদরা।