শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের ৬০-৭০টি পরিবারের বেতশিল্পীরা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বেতের তৈরি জিনিসপত্র ডেলিভারি দিতে না পারায় চরম খাদ্যসংকটে ভুগছেন তারা।
দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির জন্য চাহিদা অনুযায়ী বেতের পণ্য তৈরি করা হলেও করোনার কারণে সেগুলো ঘরেই রেখে দিতে হচ্ছে তাদের। এতে চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। দেশে বেতের তৈরি পণ্যের একাংশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী বেতশিল্পীদের মানবেতর জীবনযাপন দৃষ্টিগোচর হয়নি কারও। সরকারি কিংবা ব্যক্তিগত কারওই কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাননি তারা।
উপজেলার বেতশিল্পীর কারিগর বুরুজেন দাস বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পাইকারদের অর্ডারের মাল ডেলিভারি দিতে না পারায় বেতনও পাচ্ছি না। আমাদের অন্য কোনো কাজও নেই। সরকারের কোনো সাহায্য-সহযোগিতাও আমরা পাইনি। অনেক দিন আগে স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যানরা আমাদের ভোটার আইডি কার্ড নিয়েছেন, কিন্তু এরপর আর কোনো খবর নেই।
উপজেলার মনিপারার বেতশিল্পী যতীন কুমার দাস জানান, বৈশাখ মাসকে সামনে রেখে হরেক রকম বেতের জিনিসপত্র বানিয়েছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এবারের বৈশাখী উৎসব না হওয়ায় আমাদের বানানো পণ্য ঘরেই পড়ে রয়েছে।
ইতালি, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করার জন্য যে অর্ডার ছিল, তাও পাঠাতে না পেরে কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না তারা। সরকারি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা না পেলে না খেয়েই মারা যাবেন বলে জানিয়েছেন মানবেতর জীবনযাপনে অতিবাহিত করা বেতশিল্পীরা।