শেয়ার বিজ ডেস্ক : চীনের পর ইউরোপ করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর মধ্যে ইতালির পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে চীনের পর এখন ইতালিতে প্রতিদিন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। স্পেনে করোনাভাইরাসে মৃত্যু একলাফে বেড়ে ১০০ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে ১৫ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রেও জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর: বিবিসি ও রয়টার্স।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বিশ্বের ১২৩টি দেশের এক লাখ ৩২ হাজার ৫০০-এর বেশি মানুষ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার।
তবে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১৪৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৮২৫ জন মানুষ। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ হাজার ৪৩৮ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭২ হাজার ৫৫০ জন।
১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটিকে প্যানডেমিক (বিশ্বের বড় অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি) ঘোষণা করেছে। গতকাল সংস্থাটির প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস বলেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির কেন্দ্র এখন ইউরোপ। তিনি দেশগুলোর সরকারকে মানুষের জীবন বাঁচাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, সংহতি রাখা এবং সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এ আগুনকে আর জ্বলতে দেবেন না।’
টেড্রসের মন্তব্য এমন সময়ে এল, যখন ইউরোপের দেশগুলোয় আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ইতালিতে এখন প্রতিদিন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে কোভিড-১৯ এ মারা গেছে ২৫০ জন, আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ২৬৬ জন। মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৬৬০।
ইতালির পর ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনের পরিস্থিতি খারাপ। সেখানে গত শুক্রবার মৃত মানুষের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়ে ১২০ এ দাঁড়িয়েছে। মোট আক্রান্ত হয়েছে চার হাজার ২৩১ জন। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজ বলেছেন, আজ থেকে দুই সপ্তাহের জন্য রাষ্ট্রীয় সতর্কতা কার্যকর হবে। স্পেনের পরের অবস্থানে রয়েছে ফ্রান্স। সেখানে গতকাল ৬১ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯। আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৮৭৬ জন। জার্মানিতে মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন হাজার ৬২। মারা গেছে পাঁচজন। ব্রিটেনে আক্রান্ত হয়েছে ৭৯৮ জন এবং মারা গেছেন ১১ জন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় এ রোগ সামাল দিতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় জরুরি ত্রাণ তহবিলের ৫০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবেন ট্রাম্প।