চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় করোনার অজুহাত দেখিয়ে কয়েক দফা জিনিসপত্রের মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আর অন্য বছর শবে বরাতের পরই ক্রেতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জিনিসপত্রের মূল্যও বাড়ে।
ব্যবসায়িরা বলছেন ,চলতি বছর করোনার কারণে বাড়তি পণ্য কিনে রাখার কারণে বাজারে ভিড় পরিলক্ষিত না হলেও সপ্তাহ খানেকের মধ্যে জিনিসপত্রের মুল্য বেড়ে আকাশ চুম্বি হয়েছে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে অস্থির হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার বাজার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুদি দোকানী বলেন, বাজার মনিটরিং হয় ছোট মুদি দোকানের বেলায়। যে সব ব্যবসায়ীরা চুয়াডাঙ্গার বাজার নিয়ন্ত্রন করে তাদের ক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং হয় না। তাই এবার রমজান মাসে দ্রব্যমুল্যের দাম কমার পরিবর্তে বেড়েছে।
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে,ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বাজার এমনভাবে নিয়ন্ত্রন করছে,যার ফলে দাম বেড়েই চলেছে। চুয়াডাঙ্গায় সাধারন ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি বরং বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেথা যায়, কেজি প্রতি বরবটি ৩০ টাকা,পটল ৩০টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ২৫ টাকা,বেগুন ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ২৫টাকা ,গাজর ৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩৫ টাকা, ধনে পাতা ১০ টাকা, লাউ শাক ২০ টাকা, আলু ২২টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, খিরা ৪৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫৫ টাকা উচতে ২৫ টাকা, কাঁচ কলা ২০ টাকা, শাকের আটি ১০ টাকা, পুঁই শাক ১০ টাকা ,বাঁধা কপি ১২ টাকা, পুঁয়ের মিচরি ৩০ টাকা, লেবু হালি ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা ,আদা ৩৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ৫০০ টাকা, জিরা ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডাল ব্যবসায়ি চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারের খুচরা বিক্রেতা কামাল উদ্দীন জানান, মসুরির ডাল ৯০টাকা, ছোলার ডাল ৮৪ টাকা, মুগ ডাল ১৫৪টাকা, কালাইয়ের ডাল ১৩০ টাকা, মটরের ডাল ৪৬ টাকা, খেসারি ৬৫ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে, যা ১০ দিনে ২০ টাকা কেজিতে বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের মুদি ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দীন জানান, ডালের বাজারে খুচরা মুল্য থেকে ৮-১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের মরহুম জেহের মন্ডলের ছেলে আজিম উদ্দীন জানান, জীবনযাপন করতে আমরা হিমসিম খাচ্ছি। তেলের পাইকারী ব্যবসায়ী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল রোডের বেলগাছি কর্ণারের মালিক মহিদুল ইসলাম জানান, খোলা সয়াবিন ৯৬টাকা, সরিষার তেল ১৩৫টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারেও দাম ঊধ্র্মুখি।
বড় সাইজের রুই,কাতলা, মৃগেল ৩০০টাকা, পোনা ১৬০টাকা, তেলাপিয়া ৮০, পাঙ্গাস বড় সাইজের ১৫০, কাটরা মাছ, শিং,তোড়া, বাম ৬০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাংশের বাজারেও একই অবস্থা। রেল বাজারের ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমানের ছেলে রতন জানান, দেশী মুরগি ৩২০-৩৩০, বয়লার ১২০ টাকার পরিবর্তে ১৫০ টাকায়, লেয়ার ২২০ টাকার পরিবর্তে ২৪০- ২৫০ টাকা, সোনালী ২৫০টাকার পরিবর্তে ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খাশি ৬০০-৬৫০, গরু ৫৪০-৫৫০ মহিশ ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় চালের দাম এক মাসের ব্যবধানে মান ভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। কিছুতেই বাজার মুল্য নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে যাচ্ছে না। গত কয়েক মাস ধরে সবজির অস্থিরতা চলছেই। চুয়াডাঙ্গার বড়বাজার, নতুন বাজার, রেল বাজার, নীলমনিগঞ্জ, ডিঙ্গেদাহ বাজার, আলুকদিয়া ঘুরে দেখা যায়, সবখানে দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধগতি। আবার পাইকারী বাজারের সাথে খুচরা বাজারের পার্থক্য রয়েছে।