নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার মধ্যেও আদায় ও বিতরণ দুই-ই বেড়েছে কৃষিঋণের। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই-নভেম্বরে ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাত দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ৬৩০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বেশি, যা বছরের শুরুতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে আদায় বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এক হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই-নভেম্বরে আট হাজার ৯৩৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বিতরণ করেছে, আগের বছরের একই সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল ৮৩০৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ হয়েছে তিন হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি ও বিদেশে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ হাজার ৯৩ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে মহামারির কারণে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করার সুবিধা থাকলেও উল্টো চিত্র কৃষি খাতে। করোনার সময়ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছেন কৃষকরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কৃষিঋণ আদায় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ২৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগের বছরের স্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে আদায় হয়েছিল ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ছিল আট হাজার ৭৫২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। করোনার মধ্যেও কৃষি খাতের উৎপাদন ও সরবরাহ প্রক্রিয়া সচল থাকায় কৃষক সময়মতো কিস্তি ফেরত দিয়েছেন। আলোচিত সময়ে কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর পুঞ্জীভূত ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৯৭১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। করোনার সময়েও কৃষি খাতের উৎপাদন সচল ছিল। তাই এ খাতে ঋণের প্রয়োজনও বেশি ছিল। কিন্তু ব্যাংকগুলো তাদের সঠিক সময় ঋণ সহায়তা দেয়নি। ফলে প্রথমবারের মতো গেল অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয় ব্যাংকগুলো। গেল (২০১৯-২০) অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছিল ব্যাংকগুলো। কিন্তু অর্থবছরে শেষে এ খাতের ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। সেই হিসেবে গেল অর্থবছরে লক্ষ্যের চেয়ে পাঁচ দশমিক ৬৯ শতাংশ বা এক হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ কম হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কৃষি খাতে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
