নিজস্ব প্রতিবেদক:করোনা আতঙ্কে বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে দরপতনের প্রভাব দেশের বাজারেও পড়েছে। গতকাল ডিএসইএক্স সূচকের সবচেয়ে বড় ২৭৯ পয়েন্ট পতন হয়। লেনদেন ৪৯৯ কোটি টাকা হলেও পুরোটাই ছিল বিক্রির চাপে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯৯ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। বাকি দুই সূচকেরও বড় পতন হয়। লেনদেনের শুরুতেই সূচকের পতন হলেও দুপুর ১২টায় কেনার চাপ কিছুটা বাড়ে। এ বৃদ্ধি সত্ত্বেও এর পর টানা পতন হয়। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭৯ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা ছয় দশমিক ৫১ শতাংশ কমে চার হাজার আট দশমিক ০৫ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৬৯ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা ছয় দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে ৯২৯ দশমিক ২৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৮৮ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৪৬ দশমিক ১১ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন একদিনে ১৭ হাজার ২৯১ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১৪ হাজার ২১৯ কোটি ২৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪৯৯ কোটি ৩৫ লাখ তিন হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪২৮ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৭০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এদিন ২০ কোটি ৯৯ লাখ ২৭ হাজার ১৪৫টি শেয়ার এক লাখ ৫৪ হাজার ৩৯২ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৫ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে দুটির, কমেছে ৩৫২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল একটির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ১২ টাকা ৩০ পয়সা। এরপরে গ্রামীণফোনের ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ১৫ টাকা ২০ পয়সা। লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের ১১ কোটি ৮১ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দরপতন হয় তিন টাকা ৩০ পয়সা। সামিট পাওয়ারের ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, দর কমেছে এক টাকা ৩০ পয়সা। সী পার্ল রিসোর্টের ১০ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে এক টাকা। এছাড়া ব্র্যাক ব্যাংকের ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের আট কোটি ৪৮ লাখ টাকা, ব্যাংক এশিয়ার আট কোটি, ভিএফএস থ্রেডের সাত কোটি ৭৮ লাখ টাকা ও ওরিয়ন ফার্মার ছয় কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
গতকাল টপ টেন গেইনার তালিকা ডিএসইর ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে চার কোম্পানির দর বেড়েছে। বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির দর সাড়ে ৯ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের দর তিন দশমিক ২২ শতাংশ, হাওয়েল টেক্সের দর তিন শতাংশ ও সী পার্ল রিসোর্টের দর এক দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে।
১০ শতাংশ হারে কমে দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় উঠে আসে প্রাইম ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, আনলিমা ইয়ার্ন, বীকন ফার্মা, সিভিও পেটোকেমিক্যাল, ইন্দোবাংলা ফার্ম, ন্যাশনাল টিউবস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, পেনিনসুলা চিটাগং ও সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ৯ শতাংশের বেশি হারে দরপতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ছিল ২২০টি।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৪৬৬ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা পাঁচ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমে সাত হাজার ৪৭০ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৬৯ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা পাঁচ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৫৬ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে চারটির, কমেছে ২৪৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল চারটির দর।
সিএসইতে এদিন ৭০ কোটি ৩১ লাখ আট হাজার ৫৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২০ কোটি আট লাখ ৮৫ হাজার ৮৬৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫০ কোটি ২২ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে বিএটিবিসি। কোম্পানিটির ৫১ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা বেক্সিমকোর এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের ৯৪ লাখ, এসএস স্টিলের ৫৪ লাখ, এসএস স্টিলের ৫৪ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৫২ লাখ, ভিএফএস থ্রেডের ৪০ লাখ, সেন্ট্রাল ফার্মার ৩৯ লাখ, খুলনা পাওয়ারের ৩৮ লাখ, এডিএন টেলিকমের ৩৬ লাখ এবং খুলনা প্রিন্টিং ও প্যাকেজিংয়ের ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।