Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:05 pm

করোনা-আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

দিন দিন বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৬৭টি দেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। যার প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। এই আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে পুঁজিবাজারে ধস নামছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানের আলোচকদের আলোচনায় এমন তথ্য ওঠে আসে।

আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ আলী ও পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আহছান উল্লাহ।

অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। যার ফলে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের পতন হচ্ছে। পুঁজিবাজার এমনিতেই একটি স্পর্শকাতর জায়গা। আবার আমাদের বাজার অনেক নিম্নগতিতে রয়েছে এবং কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। এরপর বিনিয়োগকারীরা যদি আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দেন, এক্ষেত্রে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে। এখন এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। করোনায় বিশ্বের পুঁজিবাজারে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে বা কীভাবে তারা এ সমস্যা মোকাবিলা করছে। তাই সরকার ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এ বিষয়গুলো এখনই বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে। সরকার এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো নিশ্চিয়তা দেয় যে, যদি ব্যাংকগুলো এ মুহূর্তে বাজারে ১২ হাজার কোটি বিনিয়োগ করে, এ ক্ষেত্রে যদি বাজার ভালো না হয়, সেক্ষেত্রে সরকার বিনিয়োগের নিরাপত্তার নিশ্চিয়তা দেবে। ফলে দেখা যাবে, ব্যাংকগুলো বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। তারা মনে করবে সরকার আমাদের পেছনে আছে। তাই বাজারের এখন এ ধরনের ঘোষণা আশা উচিত বলে মনে করি।  

তিনি আরও বলেন, এখন বাজার যে অবস্থায় আছে একমাত্র আতঙ্কই মূল কারণ। বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যেহেতু চীন করোনাভাইরাস থেকে ইতিবাচক দিকে আসছে। আমরাও এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসব বলে আশা করি। কারণ চীনের তুলনায় এ সমস্যা কিছুই না। ইতোমধ্যে করোনায় দেশে তিনজন সুস্থ হয়েছেন। তাই বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত না হয়ে শেয়ার বিক্রি না করে দুই থেকে তিন মাস বাজারের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন সেক্ষেত্রে যেমন স্টক এক্সচেঞ্জ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না তেমনি বিনিয়োগকারীও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না এবং আতঙ্কও সৃষ্টি হবে না। 

অন্যদিকে অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আহছান উল্লাহ বলেন, এখন বাজারে একটি আতঙ্ক কাজ করছেÑএটি অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। এর মূল কারণ করোনাভাইরাস। তাই বিনিয়োগকারী লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে প্রতিটি তফসিল ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা করে বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য ঘোষণা দিয়েছে। যদি ব্যাংকগুলো একযোগে এ অর্থ বিনিয়োগ এগিয়ে আসে এবং যখন সূচক একটি ইতিবাচক ধারায় এগোবে, তখন বিনিয়োগকারীর আতঙ্ক কিছুটা নিরাসন হবে। অর্থাৎ যখন তারা দেখবে সব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাজারে বিনিয়োগ করছে তখন এমনিতে আতঙ্ক কেটে যাবে বলে মনে করি।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসে দেশে কী কী প্রভাব পড়তে পারে সরকার বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করছেন। এছাড়া বাজারে স্বার্থে বাজারসংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা একসঙ্গে বসে একটি সিন্ধান্ত নিতে হবে। করোনায় বাজারে কী প্রভাব পড়তে পারে তার একটি ইতিবাচক দিক বিনিয়োগকারীর কাছে তুলে ধরা যায় সেক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা আতঙ্ক কমবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ