করোনা পরীক্ষার ফি তুলে দেওয়ার দাবি বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক: নভেল করোনা ভাইরাস (এনকভ-১৯) শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার ফি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘করোনা টেস্টের ফি ২০০ টাকা ধার্য করে সরকার এখন ভ্যাম্পায়ারের ন্যায় রক্তচোষার ভূমিকায়। আজকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে, সরকার টেস্টের ব্যাপারে নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব জনস্বার্থে রাষ্ট্র নিজ উদ্যোগে নাগরিকদের বিনামূল্যে করোনাভাইরাস টেস্ট করা। আমরা অবিলম্বে করোনাভাইরাস টেস্টের জন্য ফি বাতিল করে বিনামূল্যে নাগরিকদের টেস্টের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’

রিজভী বলেন, ‘বিশ্বের কোথাও সরকারিভাবে কভিড টেস্টের ওপর অর্থ নেওয়া হয় না। আফগানিস্তান ও প্রতিবেশী দেশেও বিনামূল্যে, বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশ পশ্চিম আফ্রিকার বুরকিনাফাসোতেও কভিড টেস্ট বিনামূল্যে করা হচ্ছে। আমাদের দেশের শাসকগোষ্ঠী এই মহামারিকে বানিয়েছে মুনাফা অর্জনের উপলক্ষ। এরা কতটা অমানবিক নিকৃষ্টতম তার প্রমাণ করোনা টেস্টে ফি ধার্য করা। এতে নি¤œ আয়ের মানুষরা উপসর্গ থাকার পরও করোনা পরীক্ষা করাতে পারছেন না।’

অবিলম্বে সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়েও নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান রিজভী। তিনি বলেন, ‘এককভাবে না পারলে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা নিন। জনগণের জীবন নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না।’

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা তিন মাস বিনামূল্যে করার পর সম্প্রতি ফি নির্ধারণ করেছে সরকার। এর আগে শুধু বেসরকারি হাসপাতালে ফি দিয়ে নমুনা পরীক্ষা চলছিল।

রিজভী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকার নির্ধারিত সাড়ে তিন হাজার টাকায় কভিড টেস্ট করছে না। যে যার মতো পাঁচ-ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত জনগণের পকেট কেটে নিচ্ছে। সরকার তা নিয়ন্ত্রণে কোনো চেষ্টাই করছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব মনোযোগ দুর্নীতি আর লুটপাটে।’

তিনি বলেন, ‘একটি হাসপাতালে ডাক্তার-নার্সদের খাবার-দাবারের বিল ২০ কোটি টাকা দেখালেও অভিযুক্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, কোনো দুর্নীতি হয়নি। অথচ প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে এই ২০ কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা এখনও শোনা যায়নি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মহামারির চিকিৎসা কখনও ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয় না। করোনা মহামারির চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বিশ্বের কোথাও সরকারিভাবে কভিড টেস্টে অর্থ নেওয়া হয় না। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কভিড টেস্টের রেকর্ড দক্ষিণ কোরিয়ার। তারা দিনে এক লাখের ওপর মানুষের কভিড টেস্টও করেছে। এমনকি অ্যান্টিবডি টেস্টও করেছে। তাদের সব টেস্টই বিনামূল্যে করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল কিংবা বিশেষজ্ঞদের মতামতকেও তোয়াক্কা করছে না সরকার। জনগণের দল বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা করোনা পেন্ডেমিক ইস্যুতে সরকারকে বরাবরই সহযোগিতা করতে চেয়েছি। সঠিক পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সরকার সেগুলো কানে নেয়নি।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০