Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 4:41 am

করোনা মোকাবেলায় মাঠে-প্রান্তরে সোহেল সবার অন্তরে

আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আতঙ্ক নয়, সতর্কতা এবং সচেতনতাই পারে প্রাণঘাতি করোনাকে রুখে দিতে।’ কিন্তু রাষ্ট্র ব্যবস্থার আপন প্রাণ বাঁচা ধরনের কিছু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে এবং জনসমাজে আতঙ্ক ছড়িয়ে ডাকঢোল পিটিয়ে আড়ালে চলে গেছেন।

বিশ্বমহামারীর এদিনে সেসব ব্যক্তির জনসেবার নমুনা যে কোন সচেতন নাগরিকেরই বিবেক ধ্বংস কিংবা বিস্মিত না করে পারে না। জনসমাজে তাদের কৃতকর্ম সহজেই অনুমেয়। তাদের সংঘটিত জনসেবার নমুনা যে কোন সভ্য সমাজে বিকৃত, কথিত ও মুখোশরুপী হিসেবেই চিহ্নিত।

তবে স্বপ্নীল আশার সচিত্রতায় কথিত সমাজসেবকদের ভাওতায়ানা ও ফাঁকিবাজির বুলির মুখে কালিমা লেপিয়েও কিছু মানুষ দৈনন্দিন সমাজ সংসারে রাজনীতির অমিয়ধারা আর মানবতার খাতিরে নিজেকে রুদ্ধ করে রাখেননি। স্বাভাবিকতার দাবি ছিল, নিজ স্বাস্থ্য সচেতনতা রক্ষা করে স্বীয় অবস্থান থেকে জনসমাজে সচেতনতা, সতর্কতা এবং সাহসের বাণী উচ্চারিত করবেন।

আর মহামারীর বিপাকে কর্মহারা মানুষের জন্যে নিজ নিজ ভান্ডারের সহায়তার দ্বার উন্মুক্ত করণে উদার হবেন। কিন্ত সার্বিক পর্যবেক্ষণে অসময়ের জনদরদী মানুষগুলো সময়ের বড্ড বেশি প্রয়োজনে চলে গেলেন নির্জনে। নিরুদ্দেশে। আবার কেউবা একা কিংবা পরশ্রীকাতরতায় ভুগছেন হা-হুতোশে।

পেশাদার সাংবাদিক সমাজ যেরুপ পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে নিজেকে আড়ালে নিতে পারেননি, তেমনি জনপ্রতিনিধি নামের এসব ব্যক্তিরাও জাতির দুর্দিনে জনমাঠ ছেড়ে অন্ধকারে যাওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। কিন্তু সেসব জনের মনোচ্ছ গতিবিধি আজ নিরাশা আর হতাশার দোলাচলে অস্তমিত।

বাস্তবতায় সমাজ সংসারের মানবতায় হৃদপুষ্ঠ কিছু মানুষ মহামারীর এ দিনেও জনসেবায় নিজের দায়িত্ব এড়াতে পারেনি। প্রতিনিয়িত হাত বাড়াচ্ছেন মানবতার সহাস্যে। মানুষের আর্থিক কল্যাণে। রয়েছেন পিচ্ছিল আর নিন্দিত পথেও পদচারণায় একাগ্র আর এগিয়ে। তাদের দেখা মেলে পাড়া, মহল্লা, গাঁয়ের নিরন্ন, অসহায় আর সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে।

নোয়াখালীতে সরেজমিনে দেখা মেলেছে এরুপ একজনের। শহিদ উল্যাহ খান সোহেল। নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র। মহামারী করোনার আতঙ্কের প্রথম থেকেই পৌরবাসীর জন্যে নিজেকে রাখছেন ভদ্রতা আর শিষ্টাচারের যোগ্যতায় উদার ও মানবতার সহাস্যে।

নিজের স্বাস্থ্যবিধির সযত্নে পরিপাটি অক্ষুন্ন রেখে নিজেকে স্বাস্থ্যসম্মত চলাফেরায় যেমন সচেতন রেখেছেন, তেমনি অসহায় আর বিপন্ন মানুষের হয়ে দান, দক্ষিণায় রয়েছেন একপায়ে। জানান, জাতির এমন দুযোর্গে কেউ না কেউ তো সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে হবে। আর দায়িত্ব আর কর্তব্যপরায়ণতার জায়গা থেকে হয়তো আমিই সজাগ রইলাম।

নোয়াখালী পৌরসভার একজন সচেতন নাগরিক পৌর মেয়রের এমন কর্মে উদ্দীপ্ত হয়ে বলেন, জাতির এমন ক্রান্তিলগ্নে পৌরবাসীর জন্যে মেয়রের স্বাস্থ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান কিছুটা হলেও স্বস্তির দাবি রাখে। সহায়তার সময় সার্বিক সতর্কতার ওপর পৌরবাসীকে বারবারই সতর্ক করছেন মেয়র। ছুটে চলছেন প্রায় পাড়া-মহল্লায়। সামর্থ্যানুযায়ী সহায়তার ধাপ এগিয়ে দিয়ে প্রাণান্তকর চেষ্টায় কখনো ব্রত বস্তিবাসীর কাছে।

মহামারীর এ দুর্দিনে নোয়াখালী পৌরসভায় মেয়র সোহেলের অক্লান্ত সহায়তার প্রচ্ছদ কিছুটা হলেও পৌরবাসীকে সাহস আর সংগ্রামের প্রেরণায় উজ্জীবিত করছে। জেলা শহরের একজন সাংবাদিক বলেছেন, সোহেল ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করতেন। তখনও দেখেছি সে ছিল নেতা কর্মীদের বিপদে-আপদে একনিষ্ঠ ও অক্লান্ত। তিনি বলেন, রাজনীতি পেশাদার ও সত্যিকারের রাজনীতিকদের হাতে থাকলে রাজনীতি মানুষের প্রেরণা যোগায়। সোহেলের কর্ম আমাদের সে কথায় মনে করে দেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ আওয়ামী ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তৃণমূল থেকে জেলার শীর্ষ ছাত্রনেতার পদে অলংকৃত শহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেল ছিলেন সে সময়েও পুরো জেলার ছাত্রসমাজের প্রিয়মুখ। অনেকে বলেছেন, অহংকার। কেউবা বলেছেন, অলংকার। যা তার ধর্মেকর্মে আজো অজেয় ও অক্ষয় রয়েছে বলে পৌরবাসী মনে করেন।

মেয়র সোহেলের বিরোধী রাজনীতিকেরাও বলেছেন, সোহেল ছাত্রজীবনেও ছিলেন সাহসী, সংগ্রামী ও ত্যাগী। অকুতোভয়। কর্মীদের যে কোন বিপদে-আপদে তখনও শতবাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে মাত্র দেখা মেলতো তার। তারা মনে করেন, রাজপথের তীব্র সংগ্রামের সেদিনগুলোর পূণ্যময়তা আজো তাঁকে জাতির মহাদুর্দিনেও জনসমাজ থেকে বিচ্ছুরিত করতে পারেননি।

আরেকজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে আঘাতে আঘাতে শরীর ঝাঁঝরা হয়েছে তার। কিন্ত শত শত্রুতা, ষড়যন্ত্র আর প্রতিপক্ষের সক্রিয়তায় তিনি কখনো থমকে দাঁড়াননি। সাহস হারাননি।

মেয়র জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতি করি। এ রাজনীতিতে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যে বা যারা দু:সময়ে জনকাতার হারাবেন, ইতিহাসই তাদের বিপক্ষে কাল হয়ে দাঁড়াবে।

খবর পর্যবেক্ষণে প্রতিভাত হয়েছে সোহেল নোয়াখালী পৌরসভায় দায়িত্ব গ্রহণের পরই পাল্টে যেতে শুরু করে সার্বিক অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর, অবহেলিত জনসমাজের প্রত্যাশিত জীবন ব্যবস্থা। শপথ নিয়েই করছেন একের পর এক ধারাবাহিক উন্নয়ন। সমাপ্তের পথে ভঙ্গুর পৌর রাস্তাগুলোর প্রতিশ্রুত উন্নয়ন। খুপরি ঘরের ন্যায় অপরিকল্পিত স্থাপনে গড়ে ওঠা পৌরভূমিতে গড়ছেন বহুতল পৌর মার্কেট।

নোয়াখালীর সাংবাদিকদের এক নেতা বলেন, মেয়র সোহেল পৌরসভার দায়িত্ব নেয়ার আগেও গণমাধ্যমকর্মীদের বন্ধনের মানুষ হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে। নোয়াখালী প্রেসক্লাব মিলনায়তনের সৌর্ন্দয্য বর্ধনেও তার নাম অংকুরিত। ইতোমধ্যে, করোনায় শঙ্কিত গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাস্থ্য উপকরণ দিয়েও নিজেকে সম্পর্কের বন্ধনে আরো উন্নীত করেছেন। সহায়তায় সিক্ত হয়েছে পত্রিকা বিক্রয় কর্মীরাও। পত্রিকা বিক্রয়কর্মী নুর নবী বলেন, মেয়র সাহেব বারবার এ পৌরসভার হাল ধরুক, এটা আমাদের সবারই কাম্য।