‘কর্ণফুলী রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: কর্ণফুলীর তলদেশে গ্র্যাব ড্রেজার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর ক্যাপিটাল ড্রেজিং হবে। সব খালের মুখে স্টিলের নেট দিতে হবে। পোর্টের লাইফলাইন নদী। নদী না থাকলে পোর্ট থাকবে না। শিপিং ও অর্থমন্ত্রী যৌথভাবে কাজ করলে বন্দর ও কাস্টমসকেন্দ্রিক সমস্যা থাকবে না। এখন বিচ্ছিন্নভাবে কাজ হচ্ছে বন্দর ও কাস্টমসে। এ জন্য কর্ণফুলী নদী রক্ষায় সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।

গতকাল নগরীর বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে নির্ধারিত আলোচনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

এ সময় কমিটির সদস্য রণজিৎ কুমার রায়, মাহফুজুর রহমান, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, এসএম শাহজাদা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবদুছ ছাত্তার, উপসচিব বেগম মালেকা পারভীন, ড. দয়াল চাঁদ মণ্ডল, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপপরিচালক আবদুল জব্বার, সিনিয়র সহকারী সচিব এসএম আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ, সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মহিদুল হাসান চৌধুরী, হারবার মেরিন কমোডর শফিউল বারী, চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার এম আরিফুর রহমান, সচিব ওমর ফারুক, ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান ও উপসচিব আজিজুল মওলা প্রমুখ।

সভায় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম নিয়ে আমাদের স্বপ্ন আছে। বে-টার্মিনালের পরিকল্পনা কুমিরা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। এ এলাকায় যাতে কেউ স্থাপনা গড়তে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, বন্দরের কার্গোর জন্য ডেলিগেটেড সড়ক ও রেলপথ থাকতে হবে। এটি সবচেয়ে জরুরি। হামবুর্গ পোর্টে দেখেছি, ১৪ দেশের জন্য ডেলিগেটেড রেললাইন। পদ্মা সেতু সম্পন্ন হলে জিডিপিতে দেড় শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের ১৫০ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা রয়েছে ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের জন্য।

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জুলফিকার আজিজ বলেন, বন্দরে এখন ৩২ হাজার টিইউস কনটেইনার আছে। এর মধ্যে এক হাজার দিন বয়সীও আছে। দ্রুত নতুন কনটেইনার নিতে হবে। তিনি বলেন, বন্দরে ১৭ জেটি আছে, ছয়টি নির্মাণাধীন। জেটি তৈরি হবে চাহিদার ওপর। ট্রান্সশিপমেন্ট বিষয়ে কলকাতার সঙ্গে দুটি ট্রায়াল রান হবে।

মেট্রোপলিটন চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, সাত দিনে চীন থেকে ভিয়েতনামের কারখানায় কাঁচামাল চলে যায়। আমাদের লিড টাইম অনেক বেশি। এ জন্য ২১ শতাংশ রপ্তানি কমে গেছে আমাদের। বায়ার কমছে। বার্থ অপারেটর বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, বন্দরের সবকিছু সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। বিজিএমইএ’র কার্গোবাহী জাহাজ বন্দরের বহির্নোঙরে ওয়েটিংয়ে রাখা যাবে না। সারা দুনিয়া অনলাইনের আওতায় চলে এসেছে। আমাদেরও অনলাইনে কনটেইনার ইন্ডেন্ড নিতে হবে। অফডকে ল্যান্ডিং চার্জ নিচ্ছে আমদানিকারকের কাছ থেকে।

তিনি বলেন, আইসিডি নীতিমালা কেউ মানছে না। বার্থ অপারেটর ও শেড অপারেটের পৃথক করতে হবে। অপশন নেই আমদানিকারকের হাতে। এখন লেবারের জন্য চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, কনটেইনার দ্রুত সরবরাহ নিতে আমদানিকারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।

বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, স্ক্যানিং সঠিকভাবে হচ্ছে না। স্ক্যানিং না হলে রপ্তানি কার্গো যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টে জটিলতা তৈরি করবে। খুবই জরুরিভিত্তিতে স্ক্যানিং মেশিন দিতে হবে। এলসিএল পণ্যের জন্য বন্দরের বাইরে শেডে আনার সুযোগ দিতে হবে। হেজার্ড কার্গোর কনটেইনার রাখার জন্য ডাম্পিং শেড দেওয়া যেতে পারে।

কাস্টমসের সহকারী কমিশনার বলেন, ৯৮ শতাংশ পণ্য পরীক্ষা ছাড়াই যাচ্ছে। গোপন সংবাদ থাকলে কনটেইনার লক করা হয়। দিনে এ ধরনের চার-পাঁচটি কনটেইনারের বেশি নয়। শুল্কায়ন ২৪ ঘণ্টা চললেও জেটিতে হচ্ছে না।

বন্দর পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম বলেন, দুই ঈদে ১৮ দিন খোলা রাখা হয়। বন্দরকে উড়োজাহাজের মতো চিন্তা করতে হবে। তাই একদিন আগে কনটেইনারের অ্যাসাইনমেন্ট নিতে হবে। আমরা অনলাইনে এটি নেব। রেফার কনটেইনারের বিদ্যুৎ চার্জ অযৌক্তিক; কিন্তু অডিট আপত্তি দেবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০