কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১০৫৩ শ্রমিকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী বছর (২০২১) কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫৩ জন শ্রমিক নিহত ও ৫৯৪ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস। সংস্থাটি আরও বলছে, এছাড়া কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৪৭ জন। নানা খাতে ৪৩১টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১৭২টি শ্রমিক অসন্তোষ ঘটে তৈরি পোশাক খাতে।

বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার সংবাদের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা বার্ষিক প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্রভিত্তিক বিলস জরিপ-২০২১’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিলসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১০৫৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তারেদ মধ্যে ১০০৩ জন পুরুষ ও ৫০ জন নারী শ্রমিক। খাত অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৫১৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয় পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয় নির্মাণ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮৭ শ্রমিকের মৃত্যু হয় কৃষি খাতে। এছাড়া খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্পে ৫৫, দিনমজুর ৪৬, মৎস্য ও মৎস্য শ্রমিক ২৭, নৌ-পরিবহন খাতে ২৪, অভিবাসী শ্রমিক ১৮, জাহাজ ভাঙা শিল্পে ১২, বিদ্যুৎ খাতে ১১, তৈরি পোশাক শিল্পে চার ও অন্যান্য খাত যেমন- স্টিল মিল, মেকানিক, ইটভাটা, হকার, চাতালসহ প্রভৃতি খাতে ১০২ জন শ্রমিক নিহত হন।

বিলস জানায়, ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় বিভিন্ন খাতে ৭২৯ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ৭২৩ জন পুরুষ ও ছয়জন নারী শ্রমিক ছিলেন।

এছাড়া কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৫৯৪ শ্রমিক আহত হন। তাদের মধ্যে ৫৭১ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারী শ্রমিক। মৎস্য খাতে সর্বোচ্চ ১৭৬ শ্রমিক আহত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহত পরিবহন খাতে ৮০, তৃতীয় সর্বোচ্চ নির্মাণ খাতে ৪৫ শ্রমিক আহত হন। এছাড়া জাহাজভাঙা শিল্পে ৪৪, খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্পে ৩৫, নৌ পরিবহন খাতে ৩৫,  কেমিক্যাল কারখানায় ২৩, ডায়িং ফ্যাক্টরিতে ২২, উৎপাদন শিল্পে ২২, কৃষি খাতে ১৯, দিনমজুর ১৯, তৈরি পোশাক শিল্পে ৫ ও অন্যান্য খাতে ৫৯ শ্রমিক আহত হন।

সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, বজ্রপাত, অগ্নিকাণ্ড, ওপর থেকে পড়ে যাওয়া, পড়ন্ত বস্তুর আঘাত, বিষাক্ত গ্যাস, নৌ-দুর্ঘটনা, দেয়াল/ছাদ ধসে পড়া, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ প্রভৃতি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

বিলসের জরিপ অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২৮৬ জন শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হন। তাদের মধ্যে ২৩২ জন পুরুষ ও ৫৪ জন নারী শ্রমিক। ২৮৬ জনের মধ্যে ১৪৭ জন নিহত, ১২৫ জন আহত, ছয়জন নিখোঁজ, দুজনের ক্ষেত্রে আত্মহত্যা, অপহƒত পাঁচজনকে উদ্ধার ও একজনের ক্ষেত্রে নির্যাতনের ধরন উল্লেখ করা হয়নি।

সবচেয়ে বেশি ৯৯ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন পরিবহন সেক্টরে, যার মধ্যে ৭৬ জন নিহত, ১৯ জন আহত, দুজন নিখোঁজ এবং অপহƒত দুজন শ্রমিককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ জন গৃহশ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন, যার মধ্যে ১২ জন নিহত, ২৪ জন আহত, দুজনের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করা হয়। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৮ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন মৎস্য খাতে, যার মধ্যে পাঁচজন নিহত, ১৯ জন আহত, চারজন নিখোঁজ। এছাড়া ২৬ জন নিরাপত্তা কর্মী  নির্যাতনের শিকার হন, যার মধ্যে ১৪ জন নিহত, ১১ জন আহত এবং একজন অপহƒত নিরাপত্তা কর্মীকে উদ্ধার করা হয়। কৃষি খাতে ২২ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন, যার মধ্যে ১৫ জন নিহত, সাতজন আহত হন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০