কর হ্রাস ও আমদানিতে শুল্কারোপ নীতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি কমাবে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দেশটিতে কর হ্রাস করেছেন এবং প্রধান অংশীদার দেশগুলোর পণ্য আমদানিতে শুল্কারোপ নীতি নিয়েছেন। এতে প্রবৃদ্ধির উন্নতি আশা করছে তার প্রশাসন। কর হ্রাসের সুবাদে প্রথম প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়েছেও। তবে একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, কর হ্রাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। চলতি বছরের চেয়ে আগামী বছর প্রবৃদ্ধি কমবে। ২০২০ সালের মধ্যে মন্দা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। খবর রয়টার্স।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর বিজনেস ইকোনমিকস (এনএবিই) ৪৫ অর্থনীতিবিদের মত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পর্যালোচনা করেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে দুই দশমিক আট শতাংশ। কিন্তু আগামী বছর এ প্রবৃদ্ধি কমে দুই দশমিক ছয় শতাংশে পৌঁছাবে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনএবিই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন সুইটট জানান, তিন মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল অর্থনীতিবিদদেরÑএ প্যানেলটি এখন অনেকটাই কম আশাবাদী।
জরিপে অংশ নেওয়া ৫৭ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, কর হ্রাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে বাকিরা প্রত্যাশা করেন প্রবৃদ্ধি ইতিবাচকই থাকবে। তিন মাস ধরে চলা এ গবেষণায় প্রধান গুরুত্ব পেয়েছে কর হ্রাস ও সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধ।
জরিপবিশ্লেষক স্টিভেন কোচরান বলেন, ট্রাম্পের কর হ্রাস স্বল্প মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে, তবে আগামী বছর তা আবার কমবে। তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিবিদরা সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্য অংশীদারদের পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রেরই ক্ষতি হবে বেশি। দেশটির প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অর্ধেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিক থেকে ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে হতে পারে। তিন-চতুর্থাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান নীতি দেশটির অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক।
সর্বশেষ গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা ইউরোপ, মেক্সিকো ও কানাডার ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্কারোপ করে। এছাড়া আরও পণ্য আমদানিতে শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছে দেশটি। এর জবাবে ওই দেশগুলোও পাল্টা শুল্কারোপের কথা ভাবছে। এতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের দামামা বাজতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়বে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপরই।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি হবে দুই দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী বছর প্রবৃদ্ধি হবে দুই দশমিক সাত শতাংশ। ট্রাম্পের তিন শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যের চেয়ে এটি কম।
২০০৯ সালের জুনের মন্দার পর থেকে মার্কিন অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির প্রবৃদ্ধির এটি দ্বিতীয় ঘটনা, যদিও এ সময়ে প্রবৃদ্ধির হার ছিল শ্লথ।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০