বিনোদন কেন্দ্র ‘রবীন্দ্র সরোবর’। এটি একটি লেক। এর অবস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতায়। কলকাতা শহরের অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র এটি।
কলকাতার ঢাকুরিয়া অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এর আগের নাম ছিল ঢাকুরিয়া লেক। ১৯৫৮ সালে ‘রবীন্দ্র সরোবর’ নামে নামকরণ করা হয়।
সরোবর লেকটিতে পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। প্রবেশপথের টাইলসে রবীন্দ্রনাথের লেখনী চিত্রিত রয়েছে। সরোবরের পাড়গুলো রঙিন টাইলস দিয়ে সাজানো। এছাড়া এর রেলিংয়ে বোলার্ড লাগানো আছে। বোলার্ড হচ্ছে আবহাওয়া প্রতিরোধী সৌর লন আলো, যা দর্শকের চোখে আকর্ষণীয় করে তোলে। নিরাপত্তার কারণেও এ আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানকার দেয়ালগুলো ভারতীয় কার্টুন চরিত্রের আদলে অঙ্কন করা। এই লেকে সুইমিংপুলও রয়েছে, এর সঙ্গে পদ্ম ফুলে ভরা একটি পুকুরও দেখতে পাওয়া যায়।
রবীন্দ্র সরোবর লেকটির উত্তরে সাউদার্ন অ্যাভিনিউ, পশ্চিমে রসা রোড, পূর্বে ঢাকুরিয়া অঞ্চল ও দক্ষিণে কলকাতার রেলওয়ে লাইন অবস্থিত। লেকের পূর্ব পাশে অর্থাৎ ঢাকুরিয়া অঞ্চলে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়াম অবস্থিত। এ স্টেডিয়ামটি কলকাতার প্রথম কংক্রিটের তৈরি স্টেডিয়াম। ২৬ হাজার আসনবিশিষ্ট এ স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সময়। সরোবর লেকের পাশে কলকাতার একটি জাপানি বৌদ্ধমন্দির রয়েছে।
সরোবর লেকের ভেতরে নজরুল মঞ্চ রয়েছে। এছাড়া রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য লেক ও স্টেডিয়ামের মাঝখানে বসানো রয়েছে। লেকের কিনারগুলো সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন গাছগাছালি দিয়ে ভরা। এখানে শতাধিক বছরের পুরোনো বিলুপ্তপ্রায় কিছু গাছ রয়েছে।
শীতকালে এ লেকে স্থানীয় পাখিসহ অতিথি পাখি এসে ভিড় জমায়। তাই এখানে আসার উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতকাল। এ সময় বিভিন্ন পাখির ঝাঁক দেখতে পাওয়া যায়। এই লেকে শুধু পাখিদের খেলাই চলে না, এর সঙ্গে চলে মাছের খেলাও। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে; তবে এসব মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
স্থানীয়রা সকালে মুক্ত বাতাসে হাঁটতে রবীন্দ্র সরোবর লেকে আসেন। সূর্যোদয়ের সময় অনেকে প্রার্থনাও করতে আসেন এখানে। পিকনিক স্পটের জন্য এই লেক যথাযথ জায়গা বলা চলে।
লেকের ভেতরে একটি গ্যালারি রয়েছে, যা ঠাকুরদের গ্যালারি নামে পরিচিত। এ গ্যালারিতে কলকাতার সাম্প্রতিককালের বেশ কিছু পুরস্কারপ্রাপ্ত দুর্গামূর্তি সাজিয়ে রাখা আছে।
কামরুন নাহার ঊষা