নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিলার বা আড়তদাররা এক হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি মজুত করতে পারবেন না। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে হুশিয়ার করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে এক বৈঠকে তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশে কাঁচা পাটের সংকট হওয়ায় পাটকলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় দেশের বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে নিয়মবহির্ভূত মজুতের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে সরকার।’
সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ), বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে এদিন বৈঠক করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের’ কাঁচা পাট কেনা-বেচা ও মজুত করা থেকে বিরত রাখা; ভেজা পাট কেনাবেচা রোধ করা; বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চলতি পাট মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাট চাষ নিশ্চিত করতে বীজ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলেন মন্ত্রী।
তিনি জানান, মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচ বছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে।
গোলাম দস্তগীর বলেন, প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি-নির্ভরতা তখন আর থাকবে না। চলতি পাট মৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে, ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচ বছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে।
পাট মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনের জন্য কৃষকদের মানসম্মত পাট উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করা ও তাদের সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প চলমান।
দেশের ৪৬ জেলার ২৩০টি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর অধীন তালিকাভুক্ত সব পাটচাষিকে বিনা খরচে উফশী জাতের পাটবীজ, সার (ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপিও), বালাইনাশকসহ কৃষি যন্ত্রপাতি দেয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৬৯৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। রপ্তানি আয়ে পাট খাত এখন চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুর রহমান, বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন এবং বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সেখ নাসির উদ্দিন বৈঠকে ছিলেন।