শেয়ার বিজ ডেস্ক: ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাজারে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ, শসা আর টমেটো। ক্রেতাদের অভিযোগ, চিরাচরিতভাবে সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে এ তিন পণ্য। ঈদে আপ্যায়নের অনুষঙ্গ সালাদ, কোরবানির ঈদে মাংসের সঙ্গে এটি প্রায় সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ আইটেম। তবে বৃষ্টি আর ঈদকে উছিলা করে সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীদের নজর এবারও এড়াতে পারেনি এ পণ্য তিনটি। ফলে লাগামহীম দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ, শসা আর টমেটো।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোয় প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে। টমেটো ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আর শসা ১৫০ টাকা। আমদানির অনুমতি দিয়েও টমেটো ও কাঁচা মরিচের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, গত রোববার সারাদিনে মোট ৩০টি আইপি (আমদানি অনুমতিপত্র) দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ১১ হাজার ৬০০ টন কাঁচা মরিচ আসবে। অন্যদিকে ৬৮টি আইপির বিপরীতে ৫৫ হাজার ৬০০ টন টমেটো আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে যারা আমদানি করছেন, তারাও দেশীয় বিক্রেতাদের সঙ্গে মিল রেখেই কম দামে আমদানি করা কাঁচা মরিচ বেশি দামে বিক্রি করছেন। ঈদের সময় চাহিদাকে পুঁজি করেই তারা সুযোগটি নিয়েছে। সরকারি ছুটি থাকার কারণে বাজারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুপস্থিত। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচাবাজারে মনিটরিং করে না। এটাকেই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে নিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদিও দু-চারদিন পরে স্বাভাবিক নিয়মেই কাঁচা মরিচের দাম কমে যাবে। কারণ, তখন চাহিদা কমবে, একইসঙ্গে আমদানির সুযোগে সরবরাহ বাড়বে। কিন্তু এই দু-চারদিনেই ভোক্তাদের পকেট পরিষ্কার করে অধিক মুনাফা করে নেবে সুযোগসন্ধানী সেই ব্যবসায়ীরা।
একই অবস্থা টমেটো আর শসার ক্ষেত্রেও। বলা হচ্ছে শসা আর টমেটো গ্রীষ্মকালীন সবজি নয়। এ দুটি শীতকালীন সবজি বলে অনেকে দাম বেশি নিচ্ছে। তবে এখন দেশে গ্রীষ্মকালীন টমেটো আর শসা উৎপাদন হচ্ছে ব্যাপক হারে। কাজেই বাড়তি কোনও খরচ লাগছে না টমেটো আর শসা উৎপাদনে।
বাড়তি দামের বিষয়টি সম্পর্কে শ্যামবাজার ব্যবসায়ী মোখলেস উদ্দিন জানিয়েছেন, বাজারে কোথায় সিন্ডিকেট তা আমাদের জানা নেই। আমরা যে দামে কিনি, সেই দামের সঙ্গে নিজেদের কিছুটা মুনাফা যুক্ত করে বিক্রি করি। সেখানে প্রতি কেজিতে ১ থেকে দেড় টাকা বেশি হতে পারে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা এই সুযোগটি নেয়। তারা নানা অজুহাতেই সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম নিজেদের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে বিক্রি করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় গত রবিবার (২৫ জুন) কাঁচা মরিচ ও টমেটো আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। পরদিন (সোমবার) কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে তা কোথাও ৪০০ আবার কোথাও ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। গত দুই দিনের বৃষ্টি এতে নতুন পালক যুক্ত করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিলেও ঈদের আগে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। কারণ, আমদানি করা কাঁচা মরিচ দেশে আসতে সময় লাগবে।